ভূরুঙ্গামারীতে ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে এক শিক্ষকের বরখাস্তের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার সোনাহাট দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে মেইন রোড অবরোধ করে টায়ার পুড়ে এ বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, কয়েক দিন আগে সোনাহাট দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের বিএসসি শিক্ষক মন্জুরুল ইসলামের কাছে প্রাইভেট পড়তে যায় ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনির এক ছাত্রী। ওই ছাত্রীকে একা পেয়ে অনৈতিক উদ্দেশ্যে তার শরীর স্পর্শ ও কুপ্রস্তাব দেয় শিক্ষক মন্জুরুল ইসলাম এবং এই ঘটনা অন্যদের জানাতে নিষেধ করে।
পরে ভূক্তভোগী ছাত্রী তার এক বান্ধবীকে ঘটনাটি খুলে বলে। পরে ধীরে ধীরে ঘটনাটি সকল শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে পরে। বৃহস্পতিবার (২৯ আগষ্ট) দুপুরে বিদ্যালয়ের সকল ছাত্র-ছাত্রীরা অভিযুক্ত শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিলে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। পরে ওই শিক্ষককে বিদ্যালয় থেকে বরখাস্ত সেই সাথে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবিতে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সোনাহাট কলেজ মোড় ও বাজার হয়ে পুনরায় বিদ্যালয়ের সামনে মেইন রোড অবরোধ করে অভিযুক্ত শিক্ষকের বরখাস্ত করার দাবিতে স্লোগান দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। এঘটনায় গত বুধবার (২৮ আগষ্ট) প্রধান শিক্ষক বরাবরে ভুক্তভোগী একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। উক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন এর স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপনে দেখা যায় অভিযুক্ত শিক্ষক মন্জুরুল ইসলামকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, এঘটনা প্রথম নয়, শিক্ষক মন্জুরুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে এর আগে নারী কেলেঙ্কারির অনেক অভিযোগ আছে। কিন্তু আওয়ামী যুবলীগের সোনাহাট ইউনিয়নের সভাপতি হওয়ায় লোকজন ভয়ে তার বিরুদ্ধে মুখ খুলত সাহস পেতো না। তার বিরুদ্ধে কিছু বললেই তাদের উপর অন্যায়, অত্যাচার আর জুলুম নেমে আসতো। অভিযোগ রয়েছে যুগলীগের সভাপতি হয়ে বিভিন্ন রাস্তা ঘাটের কাজ গুলো সাব কন্টাক্টে নিয়ে নাম মাত্র কাজ করে দায় সারতো। এনিয়ে সংবাদকর্মীরা নিউজ করতে গেলে তার ক্যাডার বাহিনী দিয়ে সংবাদকর্মীকে হেনেস্তা করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে আন্দোলন করতে থাকে। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও অত্র বিদ্যালয়ের সভাপতি গোলাম ফেরদৌস এসে মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে এঘটনা তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বস্ত করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বন্ধ করে রাস্ত ছেড়ে দিতে বলেন। পরে শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ ছেড়ে দেন।