জামালপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জামালপুর সদর হাসপাতালের প্রধান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক, দুর্নীতিবাজ আবু হান্নানের তাৎক্ষণিক বদলীর দাবিতে সহকারী পরিচালকের অফিস ঘেরাও করেছেন হাসপাতালের নার্স ও কর্মচারীরা। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস সহকারী পরিচালকের।
শনিবার, দুপুরে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জামালপুর সদ হাসপাতালের ভুক্তভোগী নার্স ও কর্মচারীরা প্রধান সহকারী আবু হান্নান, মুদ্রাক্ষরিক হাবিব ও স্টেনো টাইপিস্ট আঃ ওয়াদুদ খেদাও আন্দোলনে অংশ নেন।
আন্দোলনকারীরা জানান, মোঃ আবু হান্নান ২০০০ সালের গোড়ার দিকে জামালপুর ২৫০শয্যা হাসপাতালে অফিস সহকারী হিসেবে যোগদান করেন। ২০১০ সালে তার দূরসম্পর্কের মামা জামালপুর শহর আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতার ক্ষমতাকে ব্যবহার করে প্রধান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক বনে যায়। তারপর থেকেই হাসপাতালের যাবতীয় কর্মকাণ্ডের কর্তৃত্ব চলে আসে তার হাতে। ডাক্তার কর্মচারীদের নানা সুযোগ সুবিধাদী, হাসপাতালের পণ্য ক্রয় বিক্রয়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ ও আয় ব্যয় নিয়ন্ত্রণে নেয়। আর এসব খাত থেকে নানা ফাঁদ ও কৌশল সৃষ্টি করে, দুর্নীতিবাজদের নানা সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি করে দিয়ে হাতিয়ে নেয় লক্ষ লক্ষ টাকা। এসব দুর্নীতি ও অনিয়ম করে মাত্র ১৫ বছরে সে বনে গেছে কোটি কোটি টাকার মালিক। বর্তমানে সে জামালপুরের ইকবালপুরে বাড়ি, আমিনা জেনারেল হাসপাতালের সামনে ৫০ লক্ষাধিক টাকার জমি ও ঢাকার উত্তরায় বহুতল বাড়ির অংশীদার। রয়েছে ব্যবসা বাণিজ্য ও কিনেছে আবাদী জমি।
হান্নান, ব্লাড ব্যাংকের আমিনুল ইসলাম , দর্জি মামুন, রেডিওলজিস্ট আবুল কালাম ও আলট্রাস্নোগ্রাফী বিভাগের আয়াকে নিয়ে সরকারি অর্থআত্মসাতের একটি চোরাচক্র তৈরি করেছিল। যারা ভূয়া ভাউচারের মাধ্যমে রোগীদের কাছ থেকে পরীক্ষার ফি আদায় করে সরকারকে ফাঁকি দিয়ে আত্মসাৎ করত।
তার এহেন কর্মকাণ্ডের অভিযোগে সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মুরাদ হাসান তাকে শাস্তি স্বরূপ নেত্রকোনার খালিয়াজুড়িতে বদলী করেছিলেন। কিন্তু, তার ক্ষমতার খুঁটির জোরে সে কয়েক মাসের মাথায় আবার জামালপুরে চলে আসে। শুধু তা-ই শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজের প্রধান সহকারীর দায়িত্ব নেন। এভাবে নানা সময় তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠলেও সে টাকা দিয়ে সবাইকে কিনে ফেলত। আর অভিযোগকারীদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আরও খড়গ জারি করত। তার গেঁড়াকল থেকে সহকারী পরিচালক ডাঃ আল আমিন, আরএমও ডাঃ শফিক, ডাঃ ফেরদৌস হাসান ডাঃ কামরুজ্জামানসহ নার্স, কর্মকর্তা, সরকারি বেসরকারি কর্মচারী কেউ রেহাই পায়নি।
এব্যাপারে ২৫০ শয্যা হাসপাতালের সহকারী পরিচালক, ডাক্তার মাহফুজুর রহমান বলেন, আন্দোলন কারীদের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয ব্যবস্থা নেওয়া হবে।