শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:২৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বিদেশী পিস্তল ও দেশীয় এলজিসহ আটক ২ বাংলাদেশ তঞ্চঙ্গ্যা কল্যাণ সংস্থার সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত মধুপুরে সুমী নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার নোয়াখালী বেগমগঞ্জ উপজেলার ২নং গোপালপুর ইউনিয়নে আইন শৃংখলার ব্যাপক অবনতি। শ্যামনগরে মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নে কৃষক সমাবেশ।  জগন্নাথপুরে মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের ক্ষেত্র সহকারীর বদলী জনিত বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত জগন্নাথপুরে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিং ও ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান মোহনপুরে সরকারি ডিগ্রি কলেজে নবীন বরণ বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মধুপুরে তারুণ্যের উৎসব শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে  বিলাইছড়িতে ত্রৈ-মাসিক ইয়ুথ সভা

মেয়র অয়েজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ
  • Update Time : শনিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৪
  • ৫৪ Time View

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র অয়েজ উদ্দিন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
পৌরবাসী সরেজমিন অনুসন্ধান পুর্বক দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদুক) হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
 জানা গেছে, সরকারি বিধি-বিধানের তোয়াক্কা না করে অবাধে অর্থ লোপাটের ঘটনা ঘটেছে  গোদাগাড়ী পৌরসভায়। বছর বছর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি খাতের বরাদ্দ ছাড়াও অভ্যন্তরীণখাত থেকে পাওয়া বিপুল পরিমাণ টাকার সিংহভাগই ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে লোপাট করা হয়েছে। সুত্র জানায়, পলাতক মেয়র অয়েজ উদ্দিন বিশ্বাস, সহকারি প্রকৌশলী কাম সচিব সারওয়ার জাহান এবং হিসাব রক্ষক হেলাল উদ্দিন মিলে এসব অর্থ লোপাট করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সহকারি প্রকৌশলী সারওয়ার জাহান রাজশাহী নগরীর কোর্ট এলাকায় বানিয়েছেন আলিশান  চারতলা বাড়ি। পলাতক মেয়রও কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। এসব  অভিযোগ কাউন্সিলর ও পৌরবাসীর।
এদিকে গত ১৯ আগষ্ট পৌর প্রশাসকের দায়িত্ব গ্রহণের পর জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (উপ-সচিব) পৌরসভার ব্যাংক হিসাবে মাত্র ১৬ হাজার টাকা পেয়েছেন। নতুন প্রশাসক চলতি পরিষদের আমলে গৃহীত ও বাস্তবায়িত উন্নয়ন প্রকল্প ছাড়াও অর্থ বরাদ্দ ও আহরণ সংক্রান্ত নথিপত্র তলব করেছেন। প্রশাসক জানিয়েছেন তিনি মাত্র একদিন অফিস করতে পেরেছেন। আগামিতে প্রকল্প গ্রহণ বাস্তবায়ন ও অর্থ ব্যয়ের বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হবে।
গোদাগাড়ী পৌরসভার বাসিন্দারা বলেছেন, পৌরবাসীর সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারণের বদলে পলাতক মেয়র অয়েজুদ্দিন বিশ্বাস, সহকারি প্রকৌশলী কাম সচিব সারওয়ার জাহান ও হিসাব রক্ষক হেলাল উদ্দিন মিলে লোপাট করেছেন সিংহভাগ অর্থ। নথিপত্র তল্লাশি করলে শত শত ভুয়া ও গায়েবি প্রকল্প বেরিয়ে আসবে যেগুলি সম্পর্কে পৌরসভার কাউন্সিলাররাও অবহিত না। তাদের আরও অভিযোগ বছর বছর বিপুল পরিমাণ বরাদ্দ আসলেও খানা খন্দকে ভরা পৌর সড়কগুলির একটিও সংস্কার করা হয়নি। বছরের পর বছর সংস্কার না হওয়ায় সড়কগুলির অধিকাংশতেই চলাচলে দূর্ভোগ পোহাতে হয় বাসিন্দাদের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৫ সালের ১ জানুয়ারি ১৪ দশমিক ২৭ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে গোদাগাড়ী পৌরসভা গঠিত হয়। পৌরসভার মোট জনসংখ্যা ৪২ হাজার ৭৬৬ জন। পরবর্তীতে গোদাগাড়ী পৌরসভাকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়। এই হিসেবে গোদাগাড়ী পৌরসভায় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বছরে মোট ৭২ লাখ টাকা বরাদ্দ আসে। বর্তমানে ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫টি উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে বলে দাবি করেছেন সহকারি প্রকৌশলী সারওয়ার জাহান।
সহকারি প্রকৌশলীর দাবি অনুযায়ী এসব প্রকল্পের আওতায় পৌরসভার সড়ক সংস্কার ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হচ্ছে। গত ২১ আগস্ট গোটা পৌর এলাকা সরেজমিনে ঘুরে কোন সড়ক সংস্কারের কাজ চোখে পড়েনি। ড্রেনেজ প্রকল্পের কাজ কোথায় হচ্ছে সেটাও জানাতে চায়নি সহকারি প্রকৌশলী।
পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামিম আকতার বলেন, কোথায় কোন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে অথবা হচ্ছে তা আমাদের জানানো হয়নি। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে চলতি পরিষদ দায়িত্ব গ্রহণ করে। কিন্তু গত সাড়ে তিন বছরেও আমার ওয়ার্ডে এক ছটাক উন্নয়ন কাজ হয়নি। মাসিক সভার কার্যবিবরণী কোন কাউন্সিলরকে দেওয়া হয় না। ফলে আমরা জানতেও পারি না কোন সভায় কোন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে অথবা কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমাদেরকে ডেকে শুধু মাসিক সভার উপস্থিতির রেজিষ্টারে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হয়েছে। আমরা বারবার মাসিক সভার কার্যবিবরণী চেয়েছি। কিন্তু কোনভাবেই দেওয়া হয়নি। অন্য কাউন্সিলরদের জিজ্ঞাসা করলে তারাও একই কথা বলবেন।
পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার সাড়ে তিন বছরের কার্যকালে মাসিক সভার কার্যবিবরণী চেয়েও পাইনি। ফলে আমরা জানতেই পারি না কোথায় কোন প্রকল্পে কত টাকা ব্যয় হচ্ছে। সাবেক মেয়র, প্রকৌশলী ও হিসাব রক্ষক ছাড়া কেউ কিছু জানে না। সবকিছু চলছে মনগড়াভাবে। নথিপত্র বের করা সম্ভব হলে শত শত গায়েবি প্রকল্পের বিবরণ বের হয়ে আসবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় হাট বাজার ও সড়ক ইজারা দিয়ে চলতি বছরে প্রায় পৌনে দুই কোটি টাকা রাজস্ব পায় গোদাগাড়ী পৌরসভা। এই টাকা পৌরবাসীর উন্নয়নে ব্যয় হওয়ার কথা। কাগজ কলমে প্রকল্প দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ এই টাকা ভাগ বাটোয়ারা করে নিয়েছে তিন জনের সিন্ডিকেট। তবে পৌর সচিবের দাবি হাট বাজার ইজারার ৯ লাখ টাকা এখনো ইজারাদারের কাছ থেকে আদায় হয়নি।
জানা গেছে, ২০২১ সালে ২১ এপ্রিল মেয়র মনিরুল ইসলাম বাবু মারা গেলে প্যানেল মেয়র ও ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওবাইদুল্লাহ ৯ মাস মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন। এ সময়ে ওবাইদুল্লাহ পৌরসভার অধিকাংশ তহবিল খালি করে দেন।পৌরসভার সিঅ্যান্ডবি এলাকার বাসিন্দা এসাহাক আলী বলেন, সিঅ্যান্ডবি মোড় থেকে মাওলানা গেট ও মাদারপুর হয়ে রেলবাজার পর্যন্ত সড়কটি কয়েক বছর ধরে ভেঙ্গেচুরে একাকার হয়ে আছে। কিন্তু এটির কোন সংস্কার হয়নি। মহিষালবাড়ি মোড় থেকে রেলবাজার পর্যন্ত সড়কটিও সংস্কারের অভাবে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। ড্রেন না থাকায় রেলবাজার এলাকায় জলাবদ্ধতা নিয়মিত ঘটনা।নঅভিযোগের বিষয়ে জানতে পলাতক মেয়র অয়েজুদ্দিন বিশ্বাসের মোবাইল নম্বরে ফোন দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে। সহকারি প্রকৌশলী কাম সচিব সারওয়ার জাহান বলেন, মাসিক সভার কার্যবিবরণী কাউন্সিলরদের দেওয়া হয়ে থাকে। ভুয়া ও গায়েবি প্রকল্পের মাধ্যমে বছর বছর বিপুল অর্থলোপাট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নিয়ম নীতি মেনে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। মাসিক সভায় কাউন্সিলরদেরকে বিস্তারিত অবহিত করিয়ে অনুমোদন করানো হয়। ১২ কোটি টাকার চলমান ১৫ প্রকল্পের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানতে চাইলে তার দাবি এগুলি পৌর এলাকাতেই বাস্তবায়ন হচ্ছে।#

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102