চার মাস বয়সের তাফসিন কবীর রিহান। জন্মের পর ২য় টিকা পেলেও তৃতীয় দফায় টিকা নিতে গিয়ে সরকারি হাসপাতাল সহ ইউনিয়ন টিকাদান কেন্দ্র ঘুরেও টিকা দিতে পারেননি তার পরিবার। তাফসিন কবীর রিহান টাঙ্গাইল জেলাধীন মধুপুর পৌরসভার শেওড়া তলা এলাকার কায়সার আহমেদের ছেলে।
রিহানের দ্বিতীয় টিকা দেওয়া হয় তার নানা বাড়ি উপজেলার কুড়ালিয়া কেন্দ্র থেকে। কিন্ত তারিখ অনুযায়ী তৃতীয় টিকা দেওয়ার জন্য উক্ত কেন্দ্রে নিয়ে গেলে সেখানে মিলেনি কোনো ভ্যাকসিন। পরবর্তীতে সরকারি বেসরকারি হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়েও পাওয়া যায়নি শিশু সুরক্ষা টিকা। দুই সপ্তাহ যাবত টিকা না আসার কারণে তারা দিতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন। শিশুদের টিকা সংকটের এই চিত্র শুধু মধুপুর উপজেলায়ই নয় টাঙ্গাইল জেলা সহ দেশের প্রায় প্রতিটি শহর ও গ্রামের স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিত্র।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) আওতায় প্রতি বছর ৩৮ লাখ ডোজ টিকা দেয় সরকার। এসব টিকার অর্থায়নের বড় অংশ আসে বিশ্বব্যাংক ও ইউনিসেফসহ আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থার মাধ্যমে। সরকারের অপারেশন প্লানের (ওপি) আওতায় এগুলো ব্যবহার করা হয়। কিন্তু গত বছরের জুনে সেটি বন্ধ হয়ে গেলে নতুন করে ওপি চালু হয়নি, যার মারাত্মক প্রভাব পড়ে শিশুদের টিকাদানে। এরপর থেকেই দুই-একটি ছাড়া অধিকাংশ টিকা আসা বন্ধ রয়েছে। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে স্থানীয় পর্যায়ে। তারিখ অনুযায়ী টিকা দিতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন শিশুর মায়েরা।
ইপিআই সূত্রে জানা গেছে, সংক্রামক ব্যাধি থেকে শিশুদের সুরক্ষায় সরকারের ইপিআইয়ের আওতায় জন্মের পরপরই যক্ষ্মার জন্য বিসিজি ও মুখে খাওয়ার পোলিও টিকা (ওপিভি) দেওয়া হয়। জন্মের ৬, ১০ ও ১৮ সপ্তাহে নিউমোনিয়ার জন্য পিসিভি ও ডিপথেরিয়ার, হুপিংকাশি, টিটেনাস, হেপাটাইটিস ও ইনফ্লুয়েঞ্জার সম্মিলিত টিকা ‘পেনটা’ ইনজেকশন দেওয়া হয়। ১৪ সপ্তাহে দিতে হয় পোলিও ইনজেকশন। হামের টিকা (এমআর ইনজেকশন) দেওয়া হয় পূর্ণ নয় মাস ও ১৫ মাস বয়সে। তবে ইপিআইয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই সরকারের অপারেশন প্ল্যানের ওপি চালু হবে। জানুয়ারির শেষের দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে এমনটাই আশা করছেন তারা।