মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:২৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
মধুপুরে প্রতি সিগারেটের দাম দিগুণ, চলছে নৈরাজ্য  জগন্নাথপুরে চন্দন মিয়া সৈয়দুন নেছা কলেজের প্রতিষ্ঠাতার মাতার রুহের মাগফেরাত কামনায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিল বাগাতিপাড়ায় দল পাল্টে আবার দাপটে হাইব্রিড নেতারা লন্ডনে সাইমুনের অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন নোয়াখালীর মাইজদীতে হকার্স মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড ডুমুরিয়ায় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে তারুণোর অনুর্ধ-১৭ জাতীয় গোল্ড কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২৫ অনুষ্ঠিত। সরিষাবাড়ীতে নানা আয়োজনে ৯ম জাতীয় হাঁটা দিবস পালিত দুই মৌলিক গান নিয়ে আসছেন দুঃখী সোহেল ডুমুরিয়ায় ইউপি সদস্যার বাড়িতে দুঃসাহসিক চুরি মধুপুর উপজেলা মেম্বার ফোরামের উদ্যোগে তিন শতাধিক কম্বল বিতরণ

ডুমুরিয়ার জনসাধারণের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। ফলে দৈনন্দিন জীবনে নেমে এসেছে অপ্রত্যাশিত দুর্ভোগ।

শেখ মাহতাব হোসেন ডুমুরিয়া খুলনাঃ
  • Update Time : শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৩২ Time View

ডুমুরিয়া (খুলনা) শনিবার ২৬ অক্টোবর দ্রব্যমূল্যে ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতির প্রভাবে তার মতো মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ যতোটা না ভুগছে তার চেয়েও খারাপ পরিস্থিতি স্বল্প আয়ের মানুষগুলোর।
গত চার মাস ধরে ডুমুরিয়া এলাকার কয়েকটি বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করছেন। বাসায় কাজ নেয়ার একটা বড় কারণ হিসেবে তিনি জানান এতে তার দুই বেলার খাবারের যোগান হয়ে যায়।
বাজারে গেলে পাঁচশ টাকা নিয়ে গেসি, ঠিক মতো দুই বেলার বাজার করতে পারি নাই। বাচ্চা মাংস খাইতে চায়, দিতে পারি না। সরকার তো বড়লোকের জন্য, আমাদের জন্য না, বলছিলেন মুনজিলা বেগম।
সাধারণ মানুষের এই হাহাকারে স্পষ্ট হয় যে সাম্প্রতিক সময়ে দ্রব্যমূল্যের ব্যাপক ঊর্ধ্বগতি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জন্য কতোটা চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
দলটি ২০০৯ সালের শুরুতে ক্ষমতাসীন হবার পর থেকে পরপর তিন মেয়াদে গত ১৫ বছর সরকার পরিচালনা করে আসছে।
কয়েক সপ্তাহ জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল ডিম। এবার ডিমের দাম কমলেও নতুন করে মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ভোজ্যতেল, চিনি ও পেঁয়াজের। পণ্যগুলোর দাম কমাতে সরকার শুল্ক ছাড় দিলেও এর প্রভাব পড়েনি পাইকারি বাজারে। অধিক মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা সরবরাহ সংকটকে প্রধান কারণ হিসেবে দায়ী করেছেন।
সম্প্রতি আমদানিতে শুল্ক ছাড় দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এতে প্রতি কেজিতে অন্তত ১০ থেকে ১১ টাকা কমার কথা। কিন্তু বাজারে ভোজ্যতেল ও চিনির দাম কমাতে শুল্ক ছাড় দেয়ার পরও কমেনি পণ্য দু’টির দাম, উল্টো বাড়ছে। এদিকে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা। তবে কিছুটা কমেছে ডিম, সবজি ও কাঁচা মরিচের দাম।
চলতি মাসের মাঝামাঝি ভোজ্যতেল আমদানিতে শুল্ক ও স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে মূসকে ছাড় দিয়েছে সরকার। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) মনে করে, এর ফলে বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়লেও দেশের বাজারে সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। কিন্তু বাজারে দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র। দাম বাড়ছেই। পাইকারি পর্যায়ে প্রতি ড্রাম (২০৪ লিটার) পাম অয়েলের দাম বেড়ে হয়েছে ২৯ হাজার ৯০০ টাকা। খুচরা ব্যবসায়ীরা প্রতি লিটার পাম অয়েল বিক্রি করছেন কমবেশি ১৫০ টাকা দরে। সপ্তাহ দুয়েক আগে প্রতি লিটার পাম অয়েলের দর ছিল ১৪০ টাকার আশপাশে। সে হিসাবে লিটারে পণ্যটির দাম বেড়েছে ১০ টাকা।
ব্যবসায়ীরা জানান, খোলা সয়াবিনের দরও লিটারে ৫ টাকা বেড়েছে। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৫৩-১৫৬ টাকা দরে। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, খোলা সয়াবিন ও পাম অয়েলের দাম প্রতি লিটারে ১ থেকে ২ টাকা বেড়েছে এক সপ্তাহে। এ অনুযায়ী বাজারে খোলা সয়াবিন বিক্রি হওয়ার কথা ১৫৬ থেকে ১৬০ টাকা। কিন্তু বাজারে খোলা সয়াবিন প্রতি লিটার ১৭০-১৭২ টাকা ও পাম অয়েল ১৬৫-১৬৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বোতলজাত তেল ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৫ লিটারের সয়াবিন ৮০০ থেকে ৮১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চলতি মাসে পরিশোধিত ও অপরিশোধিত চিনির ওপর নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। পাশাপাশি পরিশোধিত চিনি আমদানিতে শুল্ক টন প্রতি ৬ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৪ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। এতে চিনির দাম কমার কথা। কিন্তু বাজারে পণ্যটির দাম কমেনি। পাইকারি পর্যায়ে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার ২৫০ থেকে ৬ হাজার ৩০০ টাকা দরে। খুচরায় এক কেজি চিনি কিনতে ক্রেতাদের গুণতে হচ্ছে ১৩০ টাকা। কয়েকজন খুচরা ব্যবসায়ী জানান, শুল্ক কমানোর খবরে পাইকাররা তেল ও চিনির দরে কিছুটা ছাড় দেন। কিন্তু পরে উল্টো চিত্র দেখা যায়, দাম ফের বাড়ছে। ডুমুরিয়ার চুকনগর বাজারে স্বত্বাধিকারী জয়দেব জানান, ‘তেল-চিনির দর কমেনি, বরং কয়েক দিন ধরে বাড়ছে।’ পাইকারি বাজারে না কমলে খুচরায় দাম কমবে না বলে মনে করেন তিনি।

ডুমুরিয়ার বিভিন্ন বাজারে খুচরায় প্রতি কেজি ভালোমানের দেশি পেঁয়াজ ১৩০-১৩৫ টাকায় এবং দেশি হাইব্রিড পেঁয়াজ ১১৫-১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৯০-১০০ টাকা এবং তুরস্কের পেঁয়াজ ৮০-৯০ টাকা কেজি দরে।
ব্যবসায়ী ‌মোনতাজ শেখ জানান, সপ্তাহ দুয়েক আগে দেশি ভালো জাতের পেঁয়াজের কেজি ছিল ১১৫-১২০ টাকা, হাইব্রিড পেঁয়াজ ১০০-১১০ এবং ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি ছিল ৯৫-১০০ টাকা। সেই হিসাবে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০-১৫ এবং ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ১০ টাকা বেড়েছে।

আঠারো মাইল বাজারে পাইকারী পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মো: মফিজুর রহমান ও আলী হোসেন বলেন, ‘দেশি পেঁয়াজের মজুত এখন শেষদিকে। তা ছাড়া পূজার কারণে এক সপ্তাহ ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিল। এ কারণে দর কিছুটা বেড়েছে।’ এখন মিয়ানমার, তুরস্কসহ কয়েকটি দেশ থেকে পেঁয়াজ আসছে বলে জানান তিনি।
ডুমুরিয়া বাজারের মো:সেকেন্দ আলী বলেন,ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০-২০০ টাকা এবং সোনালি মুরগি ২৯০-৩১০ টাকা কেজি দরে। গরর মাংসের দর অনেকটা স্থিতিশীল; বিক্রি হচ্ছে কোথাও ৬২০ টাকা, কোথাও ৭৫০ টাকা কেজি দরে। তবে বিভিন্ন হাট বাজারে সবজির দাম কিছুটা কমেছে। এক সপ্তাহে বেশ কয়েকটি সবজির দর কেজিতে কমেছে ২০ থেকে ৪০ টাকা। শুক্রবার প্রতি কেজি কাঁকরোল ৭০-৮০ টাকা, পেঁপে ৩০-৪০, মুলা ও পটোল ৫০-৬০, ঢ্যাঁড়শ ৬০-৭০, বরবটি ৮০-৯০, গোল বেগুন ১২০-১৪০, লম্বা বেগুন ৮০-৯০, টমেটো ১৬০-১৭০, করলা (উচ্ছে) ৮০-৯০, কচুরমুখি ৫০-৬০ এবং ধুন্দল ও ঝিঙে ৬০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। গত সপ্তাহে বেশির ভাগ সবজির কেজি ছিল ১০০ টাকার ওপরে। তবে শীতের আগাম সবজি শিমের দাম কিছুটা বেশি, প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা। ফুলকপি প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকা দরে।

শাকের দাম এখনও চড়া। লালশাকের আঁটি ৫০-৬০ টাকা এবং লাউশাক ও পুঁইশাক ৪০-৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়। লেবুর দাম অনেকটা নাগালের মধ্যে, মাঝারি আকারের প্রতি ডজন লেবু বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়।কমতির দিকে কাঁচা মরিচের বাজার। প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হয় ১৮০-২০০ টাকা দরে। ব্যবসায়ীরা জানান, এক সপ্তাহ আগে পণ্যটির দাম আরো বেশি ছিল। গত বছর এই সময়ে আলুর বাজারে অস্থিরতা থাকলেও এবার তেমন পরিস্থিতি না হলেও আলুর বাজার চড়া, প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা দরে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102