দলের পদ-পদবিতে থাকলেও করেননি কোনো কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ। আন্দোলন-সংগ্রামেও দেখা যায়নি বিগত দিনে। আওয়ামী লীগ আমলে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন এবং পতনের পর আবারো ফিরেছেন বিএনপিতে। বলছি নাটোরের বাগাতিপাড়ার বেশ করেয়কজন হাইব্রিড নেতার কথা। যারা আগের মতোই দল পাল্টে নতুন করে দাপট দেখাতে শুরু করেছেন নিজ নিজ এলাকায়। এতে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন দীর্ঘ ১৭ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি নেতাকর্মীরা।
সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৯ সালের ৩০ মার্চ উপজেলার তমালতলা মহিলা কলেজ মাঠে এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলকে ফুলের মালা পরিয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব হাফিজুর রহমানের আস্থাভাজন বাজিতপুর এলাকার বিএনপি নেতা রসুল আলী, বাগাতিপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি রমজান আলী ফাকন, সদস্য ফারুক হোসেন ও বাগাতিপাড়া ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি তরিকুল ইসলাম তরুসহ প্রায় ৫০জন বিএনপি নেতা। ওই অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন তমালতলা মহিলা কলেজের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ। তবে সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগ ছেড়ে বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন ওই নেতারা। অংশ নিচ্ছেন বিভিন্ন সভা-সমাবেশেও।
এ বিষয়ে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক হারুনর রশিদ দুলাল জানান, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর একটি অংশ ভোল পাল্টে এখন বিএনপি সেজেছে। তাদের দাপটে এক সময় বিএনপি সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারত না। এখন তারাই আবার বিএনপি হয়ে দাপট দেখাচ্ছে। এরই মধ্যে দখল, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মও শুরু করেছে তারা। এতে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ছেন দীর্ঘ ১৭ বছরের বেশি সময় ক্ষমতার বাইরে থাকা মামলা-হামলার শিকার স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ত্যাগী নেতাকর্মী।
বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগ হয়ে আবার বিএনপির রাজনীতিতে ফেরা রমজান আলী ফাকন বলেন, তারা অনেক আগে থেকে বিএনপি করেন। তবে স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের চাপে সেই সময় আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠানে যেতেন। কিন্তু তারা কেউ আওয়ামী লীগে যোগদান করেননি।
এদিকে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন বলছেন, হাইব্রিড নেতাদের বিষয়ে তারা সতর্ক রয়েছেন। এরই মধ্যে দল থেকে নেতাকর্মীকে সতর্ক করা হয়েছে। দলে যোগদান অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। এর পরও বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির নাম ভাঙিয়ে অনেকে অনেক অপকর্ম করছেন। যাদের সঙ্গে বিএনপির ন্যূনতম কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। এসব বিষয়ে তারা যথেষ্ট সজাগ রয়েছেন। বিএনপির দুর্দিনে যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন, পরিশ্রম করেছেন দল তাদের মূল্যায়ন করবে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ বিষয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীকে বিভিন্ন সময়ে আশ্বস্ত করেছেন।