সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের কামড়াখাই-জয়নগর দাখিল মাদ্রাসায় গজল গাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই শিক্ষকের মধ্য বাক বিতন্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এসময় সহকারী শিক্ষক (কৃষি) রবিউল হাসানের আঘাতে অপর শিক্ষক মাহবুব আলম গুরুতর আহত হন। গুরুতর আহত মাহবুবুল আলম সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এঘটনায় পুলিশ মাদ্রাসার শিক্ষক রবিউল হাসানকে গ্রেফতার করেছে।
জানাগেছে কামড়াখাই-জয়নগর দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক মাহবুব আলম বুধবার দুপুরে মাদ্রাসার তৃতীয় তলায় টিফিনের সময় এক ছাত্রকে দিয়ে গজল শুনেন। এসময় মাদ্রাসার শিক্ষক রবিউল হাসান অন্যান্য ছাত্র পাঠিয়ে মাদ্রাসার শিক্ষক মাহবুব আলমকে গজল বন্ধ করার জন্য বলেন। পরে মাহবুব আলম মাদ্রাসার অফিস রুমে আসলে তাদের মধ্য কথা কটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এসময় রবিউল হাসান শিক্ষক মাহবুব আলমের নাকে আঘাত করলে সে রক্তাক্ত হয়। এ ঘটনার খবর পেয়ে মাদরাসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, সুপার সহ অন্যান্য শিক্ষকরা ছুটে আসেন। পরে গুরুতর আহত মাহবুব আলমকে উদ্ধার করে জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন। খবর পেয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুল ইসলামের নির্দেশে এস আই সাইফ উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে শিক্ষক রবিউল হাসান (৩৬)কে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন। ঐদিন আহত মাহবুব আলম বাদী হয়ে রবিউল হাসানকে আাসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেন। শিক্ষক রবিউল হাসানকে গ্রেফতার দেখিয়ে পুলিশ বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারী) সুনামগঞ্জ বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করেছেন। আদালতে রবিউল হাসানের জামিনের আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
জানাযায়, ২০১৩ সালে শিক্ষক রবিউল হাসান মাদ্রাসায় যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন সময়ে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়ে আসছেন। ২০১৬ সালের মার্চ মাসে মাদরাসা সুপারের সাথে রবিউল হাসানের মারামারির ঘটনা ঘটে। ঐ ঘটনায় রবিউলের বিরুদ্ধে মাদ্রাসা সুপার জগন্নাথপুর থানায় মামলা করেন।
পরে জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদ এর মধ্যস্ততায় রবিউল হাসান নিঃস্বর্ত ক্ষমা চেয়ে ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি ঘটাবেনা মর্মে অঙ্গিকার করলে বিষয়টি নিস্পত্তি হয়।
পরবর্তীতে ২০১৭সালে দায়িত্বে অবহেলা ও নিয়মবহির্ভূত আচরণ করায় তৎকালীন কমিটি রবিউল হাসানের সংশোধনির জন্য শিক্ষক স্টাফকে দায়িত্ব দিলে শিক্ষক স্টাফ ব্যর্থ হয়ে রবিউল হাসানের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মাদ্রাসা কমিটিকে লিখিতভাবে জানান।
এবং তৎকালীন কমিটি কর্তৃক রবিউল হাসানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এর ক্ষোভে মাদরাসা সুপারের সহিত ফৌজদারি অপরাধ কারায় মাদরাসা সুপার ববিউল হাসানের বিরুদ্ধে জগন্নাথপুর থানায় নন জি আর ৩৯/১৮নং মামলা দায়ের করেন।
পরবর্তিতে বিভিন্ন সময়ের ঘটনা সমুহের পুনরাবৃত্তি ঘটবেনা মর্মে অঙ্গিকার করে এবং সুপারের দায়ের কৃত মামলার ঘটনা সত্যতা স্বীকার করায় রবিউল হাসানের বিষয়টি নিস্পত্তি করা হয়।