ভূরুঙ্গামারী উপজেলার চর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের নতুন হাট বাজার এলাকায় বসতভিটা দখলে নিতে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে হত্যা চেষ্টার ঘটনা ঘটিয়ে বসতভিটা দখল করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে হামলা চালিয়ে এ হত্যা চেষ্টা করা হয়।
সরেজমিনে ও থানায় দায়েরকৃত এজাহার সুত্রে জানা গেছে, গত ০৬ আগষ্ট সকাল ১০ ঘটিকায় ভূরুঙ্গামারী উপজেলার চর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড নতুন হাট (বাজার) এলাকার মৃত হাসেম আলী পুত্র মোঃ লুৎফর রহমান (৩৭) এর পরিবারের উপর দিবালোকে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালিয়ে লুৎফর রহমানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দোকান ঘর ভাংচুর করে বসতভিটা দখল করে নেয় একই এলাকার ভূমিদস্যু আমিনুর রহমান গং। এই ঘটনায় ভূরুঙ্গামারী থানায় লুৎফর রহমান বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর ঐ মামলার আসামি আব্দুল জলিলকে নতুন হাট বাজার হতে গ্রেফতার করে থানা পুলিশ। আসামি গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসার পর বিবাদী পক্ষ আমিনুর রহমান, নূর ইসলাম, আজাদুল, আনোয়ার হোসেনসহ আরো অজ্ঞাত ২৫/৩০ জন দলবদ্ধ হয়ে মোঃ লুৎফর রহমানের বসতভিটা দখলে নিতে তার উপর সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা চেষ্টা করা হয়। এসময় লুৎফর রহমানকে লোহার রড, লাঠি সোটা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারতে মারতে তাকে মাটিতে শুয়াইয়া ফেলে বুকে পা দিয়ে চাপ দিয়ে ধরে হত্যা চেষ্টা করা হয়। লুৎফর রহমানে মাথা, কান ও চোখের পাশে ফেটে যায়। এসময় মেরুদন্ডের ও বুকের হাড় ভেঙে যায়। তখন তার শরীরের বিভিন্ন স্হানের ফাটা অংশ হতে রক্ত ধরে মাটি পর্যন্ত রক্তে ভেসে যায়। পরে এলাকাবাসী এসে তাকে অর্ধ জীবিত অবস্হায় ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেলে রেফার্ড করেন। লুৎফর রহমানের অবস্থা আরো গুরুতর হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেন। ভুক্তভোগী বর্তমানে চিকিৎসা অবস্থায় মৃত্যুর শয্যায় রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে ভুক্তভোগী লুৎফর রহমানের পরিবারের লোকজনদের বাড়ি হতে বাহির করে দিয়ে তার বাড়ির চারপাশ টিনের বেড়া দিয়ে বসতভিটা দখল করে রেখেছে আমিনুর রহমান। বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়ে কোথাও বিচার না পেয়ে অদ্যবধি ভুক্তভোগী পরিবার অসহায় হয়ে প্রানের ভয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে মানুষের দ্বারে দ্বারে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় গনমাধ্যমে নিউজ হলেও নজরে আসেনি প্রশাসনের উপর মহলের কোন কতৃপক্ষের। ভুক্তভোগী লুৎফর রহমান ও তার বোন হাসিনা বেগম বলেন, আমাদের বসতভিটা ও সুপারির বাগানসহ ৪২ শতাংশ জমি জোর পূর্বক দখল করে নিয়েছে ভূমিদস্যু আমিনুর রহমান। আমি থানায় অভিযোগ করেও এর কোন প্রতিকার পাইনি। ভূমিদস্যুরা আমাকে ও আমার পরিবারের সকলকে প্রানে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আমাদের বাড়ি থেকে বাহির করে দিয়েছে।
আমরা এখন আমাদের বাড়িতে যেতে না পেয়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি থাকছি। মামলা দায়েরের ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও কোন আসামিকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। ভুক্তভোগী পরিবার আরো বলেন, চর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের সদস্য ভূমিদস্যু আমিনুর রহমান, চর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের নেতা নুর ইসলাম ও আওয়ামী লীগের অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের ভাড়া করে এনে আমার বসতভিটা দখল করে নেয় আমিনুর রহমান। লিখিত অভিযোগ সুত্রে তথ্য উঠে এসেছে আমিনুর রহমান ও নুর ইসলাম গং আওয়ামী লীগ সরকার পদত্যাগ করার পর থেকে তারা আবার চর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়ন বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক, মোঃ শাহ জালাল (৫০), ও মৃত আজিজার রহমানের ছেলে মোঃ সেলিম রহমান (৩৫),সহ আরো কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সাপোর্টে ভুক্তভোগীর বসতভিটা দখল করে রেখেছে। এই বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবার বাদী হয়ে ভূরুঙ্গামারী থানা, ক্যাম্প কমান্ডার, আর্মি ক্যাম্প, কুড়িগ্রাম, জেলা প্রশাসক ও সাংগঠনিক ভাবে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা কমিটি (বিএনপি), বিএনপি’র জেলা কমিটি ও বিএনপি’র কেন্দ্রীয় দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।