বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:৪৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
নোয়াখালীতে দুস্থ শীতার্তদের কম্বল দিয়েছে বিকল্প ধারা সবুজ বাংলা ব্লাড ব্যাংক আয়োজিত ফাইভ নাইট ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টের পুরস্কার বিতরণ লালপুরে বিএনপির উদ্দ্যোগে সন্ত্রাস বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ  বিলাইছড়িতে খামারীদের প্রশিক্ষণ প্রদান বিলাইছড়িতে পালবার লিংসেন্টার পরিদর্শনে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ বিলাইছড়িতে কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধি’র সঙ্গে মত বিনিময় করলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ আজ সাতসকালে কলকাতাতেই ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো তিনবার লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতাকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন লক্ষ্মীপুরে অস্ত্রসহ যুবক গ্রেফতার, পরিবারের দাবী ফাঁসানো হয়েছে গভীর সমুদ্রে ভেসে যাওয়া 95,জন মৎস্যজীবী কে বাংলাদেশের কাছ থেকে প্রত্যাবর্তন করে তাদের সাথে সাক্ষাৎ মমতার

শ্যামনগরে ইটভাটায় পোড়ানো হচ্ছে কাঠ‌ও প্লাস্টিক,স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে এলাকাবাসি!

রাকিবুল হাসান সাতক্ষীরা শ্যামনগরঃ
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ৬৯ Time View

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার আইনকে তোয়াক্কা না করে অধিকাংশ ইটভাটায় অবাধে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ, প্লাস্টিক। অদৃশ্য কারণে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনও রয়েছে নিরবে।
তবে আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে উপস্থাপনের মাধ্যমে মামলা দেওয়া এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজিবুল আলম রাতুল।
উপজেলার জনবসতিপূর্ণ এলাকা ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশেই গড়ে উঠা এ সকল অবৈধ ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ক্লাস করছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের কথা, ক্লাসের সময় ইটভাটার কালো ধোঁয়া সরাসরি তাদের নাক দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে। চোখে বালু ও ধোঁয়া ঢুকে যায়। ফলে নি:শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। চোখেও সমস্যা হয়। ইটভাটার ট্রাক ও ভেকুসহ বিভিন্ন মেশিনের শব্দে ক্লাসের সময় তারা শিক্ষকদের কথা শুনতে পারে না। বিদ্যালয়ের মাঠে খেলাধুলা করার সময় ভাটার ট্রাকগুলো দ্রুতগতিতে আসে। এতে তারা ভয় পায়।
এ প্রসঙ্গে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো: তরিকুল ইসলাম বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় যদি কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো হয়, তাহলে এর বিষাক্ত ধোঁয়ায় ব্রংকাইটিস, শ্বাসকষ্টসহ শ্বসনতন্ত্রের বিভিন্ন রোগের প্রকোপ স্বাভাবিক ভাবেই বেড়ে যায়। এতে বৃদ্ধ এবং শিশুদের মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকে। ফলে এ বিষয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে।সাতক্ষীরা জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় ৯৬টি ইটভাটার মধ্যে শ্যামনগর উপজেলায় রয়েছে ১৪টি ইটভাটা। এর মধ্যে ঝিকঝাক এবং সনাতনী পদ্ধতির ভাটাও রয়েছে। এসব ভাটার মধ্যে অধিকাংশ নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র । পরিবেশের ছাড়পত্র বিহীন এসব অবৈধ ইটভাটার কোনো সরকারি অনুমোদন বা লাইসেন্সও নেই। শুধুমাত্র উচ্চ আদালতে একটি রিটের মাধ্যমে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বছরের পর বছর অবৈধভাবে চলছে এসব ইটভাটা। উচ্চ আদালতে রিট করার কারণে এসব অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারছে না পরিবেশ অধিদপ্তর।
এছাড়া স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের নজরদারি না থাকায় অবৈধ এসব ভাটায় ব্যবহৃত হচ্ছে কাঠ, প্লাস্টিক, সোয়াবিনের গাঁথ, তুষকাঠ ও টায়ার পোড়ানো বিষাক্ত কালি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উচ্চ আদালতের এক আদেশে দেশের সব অবৈধ ইটভাট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। তারপরও অবৈধ ইটভাটা বন্ধে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে এসব অবৈধ ইটভাটা পুরোদমে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।সরেজমিন শ্যামনগরের বিভিন্ন এলাকার কয়েকটি ইটভাটায় গিয়ে দেখাগেছে, প্রতিটি ইটভাটার সামনে কয়লা রাখা রয়েছে ৷ রাতে জ্বালানো হয় কাঠ, প্লাস্টিক সোয়াবিনের গাঁথ ও টায়ার পোড়ানো বিষাক্ত কালি।
উপজেলার ভুরুলিয়া ইউনিয়নের হাটছালা, নূরনগর এলাকায় জনবসতিপূর্ণ ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে গড়ে উঠেছে ৷
সোনার মোড় মাছের সেটের পাশে একাধিক ইটভাটা রয়েছে ৷ যেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ মাছ কেনা-বেঁচার জন্য সমাগম হয়ে থাকে।এভাবে জনবসতি, পৌরসভা এলাকায় অবস্থিত ভাটার কারনে বিষাক্ত ধোঁয়ায় পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে ৷
ভাটার কালো ধোঁয়া বায়ু দূষণ করে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে স্থানীয়দের ৷
ইটভাটায় জ্বালানি কাজে কর্মরত কয়েকজন শ্রমিক জানান, সংশ্লিষ্ট ভাটামালিকের নির্দেশে দিনে অল্প কয়লা ও সারারাত শুধু জ্বালানি কাঠ প্লাস্টিক, সোয়াবিনের গাঁথ, তুষকাঠ ও টায়ার পোড়ানো বিষাক্ত কালি ব্যবহার করে করে তাঁরা ইট পোড়াচ্ছেন।ইটভাটায় জ্বালানির কাজে কয়লার বদলে কাঠের ব্যবহার প্রসঙ্গে একটি ব্রিকস এর ম্যানেজার জানান, প্রথমে ভাটায় নতুন আগুন জ্বালানোর সময় ভাটার ভিতরে অল্প কিছু কাঠ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কয়লার দাম বেশি হওয়ায় সাথে প্লাস্টিক, তুষকাঠ ব্যবহার করা হয়।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার এক ইটভাটার শ্রমিক বলেন, ভাটায় কাঠ ব্যবহার করলে প্রতিটি ইটে খরচ কিছুটা কম হয়। এজন্য অধিক লাভের আশায় ভাটা মালিকরা কাঠ পুড়িয়ে ইট তৈরি করে।
কয়েকজন কৃষক বলেন, অবাধে কাঠ পোড়ানোয় একদিকে যেমন উজাড় হচ্ছে বন অন্যদিকে ধ্বংস হচ্ছে জীববৈচিত্র্য । এ ছাড়া ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে তৈরি করা হচ্ছে ইট। এতে কমছে জমির উর্বরাশক্তি। প্রতিদিন শত শত ট্রাক মাটি ইটভাটায় যাচ্ছে। ফসলি জমির উপরের অংশ কেটে ফেলে মাটি ভাটায় আনা হচ্ছে। এ কারণে আবাদি জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। ধোঁয়া ও বালুকণার কারণে গাছপালা ও পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, আমাদের ৩০ বছরের বসতভিটা। আগে একটি ভাটা ছিল। এখন চারপাশে চারটি ইটভাটা। ধুলাবালি আর ধোয়ায় ঘরবাড়ি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ঘরের ভেতর ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে বাস করছি। ইটভাটার ধোঁয়া ও বালুকণার কারণে বাড়িতে কোন গাছ-গাছালি বা খেতে ফসল ফলানো যাচ্ছে না।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102