১৯৭১ সনে মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে পাক-হানাদার বাহিনীর এদেশীয় কতিপয় দোসরদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্য এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা’র সাথে সাক্ষাৎ প্রত্যাশী চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলার ভাটিখাইন গ্রামের বাসিন্দা চিনু আচার্য্য (বয়স-৭৪) বর্তমানে একজন মানসিক রোগী। তিনি দীর্ঘ দুই বছর ধরে হাতের তালুতে নানা রং এর পোকা দেখতে পাচ্ছেন এবং ঐ পোকাগুলো উনাকে নাকি কামড়ায়। যার কারণে উনি দীর্ঘদিন রাত্রে ঠিকমত ঘুমাতে পারছিলেন না। স্থানীয় বৈদ্য, কবিরাজের কাছে গিয়ে নানাভাবে চেষ্টা করেও সুস্থ হতে না পেরে অবশেষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর মানসিক রোগ বর্হি বিভাগের চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে কিছুটা সুস্থ। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর মানসিক রোগ বর্হি বিভাগের চিকিৎসক ডা: পরাগ দে জানান যে, “এটি একটি মানসিক রোগ, এই রোগের একটি নামও আছে: রোগীকে নিয়মিত চিকিৎসাধীন থাকতে হবে।” এছাড়াও উক্ত চিনু আচার্য্য ৪ বছর পূর্বে স্ট্রোক করে ঠিকমত হাঁটাচলা করতে পারেন না; একই সাথে উনি উচ্চ রক্তচাপ, চক্ষু ও অর্থপেডিক রোগী।
গত ৪ঠা ডিসেম্বর ২০২২ইং তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত পলোগ্রাউন্ড মাঠে জনসভা উপলক্ষে চট্টগ্রাম এসেছিলেন। ঐ দিন উক্ত চিনু আচার্য্য উনার সন্তান যীশু কুমার আচার্য্য-কে সঙ্গে নিয়ে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের নিকটবর্তী স্থানে অবস্থান করেছিলেন এই উদ্দেশ্যে যে, যদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে অবস্থান করেন, তবে সুযোগ পেলে উনি ছেলে যীশু কুমার আচার্য্য-কে নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা’র সাথে দেখা করবেন। বঙ্গবন্ধু কন্যাকে রোগ-শোক, দু:খ-বেদনার কথা জানাবেন। সন্তান যীশু কুমার আচার্য্য-কে একটি চাকরি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করবেন এবং নিজের উন্নত চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহয়তা চাইবেন। সেদিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এম.এ. আজিজ স্টেডিয়ামে হেলিকাপ্টার হতে অবতরণ করে সড়ক পথে গাড়ী যোগে পলোগ্রাউন্ড ময়দানের জনসভায় অংশগ্রহণ করেন। ফলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সার্কিট হাউসে অবস্থান না করায় উনার সাথে সাক্ষাৎ করতে পারেননি। আর.টি’র সাংবাদিক ও ডেইলী স্টার বাংলা অনলাইন এর সাংবাদিক উক্ত চিনু আচার্য্য ও উনার সন্তান যীশু কুমার আচার্য্য এর সাক্ষাৎ পেয়ে উনাদের হতে সাক্ষাৎকার নেন। সাক্ষাৎকারটি আর.টি.ভি অনলাইন ভার্সন ও ডেইল স্টার বাংলা ভার্সনে প্রচার ও প্রকাশিত হয়।
বর্তমানে উক্ত চিনু আচার্য্য খুবই হতাশ। তিনি জানান যে, আমরা খুবই গরীব লোক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কি উনার সাথে আমাদের সাক্ষাৎ এর সুযোগ দিবেন? আমাকে চিকিৎসা সহায়তা দেবেন? আমার সন্তান যীশু কুমার আচার্য্য (এই প্রতিবেদক)-কে একটি চাকরি দিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন হতে মুক্ত করবেন? আমার সন্তান যীশু কুমার আচার্য্য দীর্ঘ ১০ বছর ধরে উনার সাথে সাক্ষাৎ এর চেষ্টা করে আজও সাক্ষাৎ পায়নি এবং কপালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর চাকরি জুটে নাই। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কর্তৃক প্রনীত ও প্রচারিত নির্বাচনী ইস্তেহারে প্রতিশ্রুতি ছিল যে- আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে ঘরে ঘরে একটি করে চাকরি দিবে। দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় থাকলেও বাস্তবে এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হয়েছে কি?
চিনু আচার্য্য আরো জানান যে, আমার সন্তান যীশু কুমার আচার্য্য ইউনিভার্সিটি হতে আইনের উপর ল’ ডিগ্রী নিয়ে আইন পেশায় ছিল। ২০১৭ সনে হঠাৎ হার্ট এ্যাটাক করার কারণে আইন প্র্যাকটিস ছেড়ে দেন এবং ২০১৮ সনের ৩০ ডিসেম্বর এর জাতীয় নির্বাচনের পর হতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট হতে “মানবিক বিবেচনায় কর্মসংস্থান” এর জন্য নানাভাবে অনুনয় বিনয় করে আসছিল। গত ১০/১০/২০২২ইং তারিখে আমার উক্ত সন্তান “মানবিক বিবেচনায় কর্মসংস্থান” এর জন্য বিভিন্ন গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সুপারিশ/স্বাক্ষর নিয়ে একটি দরখাস্ত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বরাবরে প্রেরণ করেন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় উক্ত দরখাস্ত গত ১২/১০/২০২২ইং তারিখে গ্রহণ করেছিল। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, অদ্যাবধি উক্ত দরখাস্তের আলোকে আমার সন্তানের চাকরি হয় নাই। আমি ও আমার সন্তান খুবই হতাশ। এমতাবস্থায় উক্ত চিনু আচার্য্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট প্রার্থনা করেন যে, সহসায় উনার সন্তান যীশু কুমার আচার্য্য-কে কর্মসংস্থান দিয়ে আর্থিক দৈন্যতা ও মানবেতর জীবন-যাপন হতে মুক্ত করার জন্য সবিনয়ে অনুরোধ জানান এবং উনাকে চিকিৎসা সহায়তা দিয়ে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার সুযোগ করে দেওয়ার প্রত্যাশা করেন।
বার্তা প্রেরক: যীশু কুমার আচার্য্য, চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি: জাতীয় দৈনিক মুক্তিযুদ্ধ ৭১ সংবাদ।