সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে সাবেক ইউপি সদস্যদের খামার বাড়িতে এক কিশোরের মৃত্যু ঘিরে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। মারা যাওয়া কিশোর লিংকন বিশ্বাস (১৭) চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের সমধল (নোয়াগাঁও)গ্রামের শ্রীকান্ত বিশ্বাসের ছেলে।
সে খামার বাড়িতে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলো।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের সমধল (নোয়াগাঁও) গ্রামের শ্রীকান্ত বিশ্বাসের ছেলে লিংকন বিশ্বাস (১৭) দীর্ঘদিন ধরে সাবেক ইউপি সদস্য লুলু মিয়ার খামার বাড়িতে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। শনিবার (২২ জুন) দুপুরে লুলু মিয়ার খামারবাড়ির গোয়াল ঘরের নিকটস্থ পুকুর পাড়ের একটি গোবরে গর্ত থেকে লিংকনের মরদেহ উদ্ধার করেন খামার বাড়ির সংশ্লিষ্টরা। এসময় খামার বাড়ির মালিক লুলু মিয়া নিহতের পরিবারকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে যান লিংকনের বাবা শ্রীকান্ত বিশ্বাস ও মা বাসন্তি রাণী।
এসময় তিনি জানান লিংকন খামারবাড়ি আমগাছে আম পাড়তে গেলে আমগাছ থেকে পড়ে গোবরের গাদায় ডুবে মৃত্যুবরণ করেন। এ ব্যাপারটি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে অবগত করলে পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে লিংকন বিশ্বাসের মরদেহ মাটি চাপা দেন। মৃত্যুর পর দিন কিশোর লিংকনের মৃত্যুকে ঘিরে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়।
লিংকনের পরিবারের দাবি তাদের সন্তান সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিল। সে সাঁতার জানতো। খামার বাড়ির ছোট্ট একটি আম গাছ থেকে পড়ে মৃত্যু হওয়ার কথা নয়। মৃত্যুর পেছনে অন্য কোনো কারন থাকতে পারে। নিহত লিংকনের বোন পূর্ণিমা বিশ্বাস বলেন, আমার ভাই পানিতে ডুবে মরতে পারে না। তার মৃত্যু দুর্ঘটনায় হয়নি। তাঁকে কেউ হত্যা করতে পারে। বিষয়টি তদন্ত করলে বের হয়ে আসবে।
নিহতের মা বাশন্তি রাণী বলেন, আমি বিশ্বাস করতে পারছিনা আমার ছেলে এইভাবে মারা যাবে। তারা বলছে সে আম পাড়তে গিয়ে মারাগেছে। ছোট্ট আম গাছে উঠবে কেন। যেখানে নিচ থেকে আম পাড়া যায়। আমি বুঝতে পারছি না তার সাথে কি হয়েছে।
লিংকের বাবা শ্রীকান্ত বিশ্বাস বলেন, আমি গরিব মানুষ। আমার আইন আদালত বুঝিনা। তারা যা বলছে তাই বিশ্বাস করেছি। আমি গিয়ে দেখছি আমার ছেলে লাশ পড়ে আছে। আমি আর কিছু জানিনা।এদিকে খামারবাড়ি মালিক লুলু মিয়ার দাবি লিংকন পানিতে ডুবে মারা গেছে। খামারের আরেক শ্রমিক জহিরুল তাঁকে খুঁজতে দিয়ে আম গাছের নিচে ডুবন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। বিষয়টি আমাকে জানালে আমরা কজন গিয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করি। পরিবারকে খবর দিলে তাদের কোনো অভিযোগ না থাকায় তারা তার মরেদেহ নিয়ে মাটি চাপা দিয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় তারা মরদেহ মাটি চাপা দেন।
জগন্নাথপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে নিহতের পরিবারের সাথে কথা বলেছি। তারা এ ব্যাপারে কিছু বলতে চায় না।পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।