নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলায় পবিত্র মাহে রমজানে হঠাৎ লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। এছাড়া বিদ্যুৎ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান থেকে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের যে তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে, তার কোনো কিছুই মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে প্রচণ্ড গরমে বিদ্যুৎহীন চাটখিলবাসীকে পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি। গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে শিশুরা। ঘেমে জ্বর-কাশিসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তারা। এছাড়া রোজা রেখে ঠিকমত রান্নার কাজ করতে হিমসিম খাচ্ছে নারীরাও। আউশ ও রোপা আমনের ক্ষেতে সেচ দিতে সংকটে পড়েছেন কৃষক।
চাটখিল পৌরসভার বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, সারাদিনে কতবার বিদ্যুৎ যায়, তার হিসাব নেই! তার ওপর শুধু রাতেই ৩-৪ বার লোডশেডিং হচ্ছে। কোনো কোনোদিন রাত থেকে ভোর পর্যন্ত থাকছে না বিদ্যুৎ। ফলে গরমে আমার পরিবারের কেউই ঠিকমতো ঘুমাতে পারছেন না। ছোট ভাইয়ের ছেলের আড়াই বছরের ছোট বাচ্চাকে নিয়েও বিপাকে আছি। কেননা, রাতে বিদ্যুৎ না থাকলে ঘেমে ঠাণ্ডাজনিত সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে। একই সমস্যায় গ্রামের প্রায় সব পরিবার। ঘন ঘন এমন লোডশেডিংয়ে গ্রামের মানুষজন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। দিনে যেমন-তেমন কিন্তু, রাতে লোডশেডিং বন্ধ রাখা গেলে মানুষজন শান্তিতে অন্তত ঘুমাতে পারবে। রোজা রাখতেও কষ্ট তেমন একটা হবে না। এছাড়াও তারাবী নামাজে লম্বা সময় ধরে নামাজ পড়তে হয়।
উপজেলার নোয়াখলা গ্রামের বাসিন্দা হাসিবুর রহমান বলেন, ৭-৮ দিন ধরে প্রচণ্ড গরমের পাশাপাশি ব্যাপকভাবে লোডশেডিং হচ্ছে। দিনে ৫ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন, এমন লোডশেডিং আগে কখনও দেখিনি। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি ভোগান্তির মধ্যে আছেন। ০১৭৬৯-৪০০৭০৮ খালিদ হাসান এ ব্যাপারে চাটখিল সাব-জোনাল অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার খালিদ হাসানকে মুটোফোনে পাওয়া যায়নি। তবে চাটখিল সাব-জোনাল অফিসের একসূত্রে জানা যায়, বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় ১৫ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে ১০ মেগাওয়াট, আবার কখনোবা পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ০৮-০৯ মেগাওয়াট। তাইতো প্রতিনিয়ত ০৪-০৫ মেগাওয়াট ঘাটতি থাকায় কিছুটা লোডশেডিংয়ের সমস্যা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের চেষ্টা সত্ত্বেও মফস্বলের গ্রাম-গঞ্জে একটু লোডশেডিং বেশি হচ্ছে, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে সকাল-বিকেলের তুলনায় সন্ধ্যার পর থেকে বিদ্যুতের চাহিদা বেশি থাকে, তাই সেসময় তুলনামূলক একটু লোডশেডিং বেশি দিতে হচ্ছে। তবে সমাধানে যথাসম্ভব চেষ্টা করছি।
এ ব্যাপারে চাটখিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহিমা মোস্তফা বলেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় একটু লোডশেডিং হচ্ছে। তবে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কাজ করবো।