ড. আলী আহমদ রুবেল, পিতা মৃত সহিদ আলী তালুকদার, সাং- সিচনী, পোঃ পাগলা বাজার, উপজেলাঃ শান্তিগঞ্জ, জেলাঃ সুনামগঞ্জ। যিনি বর্তমানে লন্ডনের কোভেন্ট্রি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে যা তার ব্যক্তিগত ও পেশাগত নৈতিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। তার স্ত্রীর অভিযোগ ড. আলী আহমদ রুবেল তাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন এবং কোনো কারন ছাড়াই তার সাথে সম্পর্ক ত্যাগ করেছেন। এমনকি তিনি দাবি করেন, তার স্বামীর অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে রুবাইয়া নীঝুম নামের একজন নারীর সঙ্গে, যার কারণে অবশেষে তাদের সম্পর্কে বিচ্ছেদ ঘটে।
অনুসদ্ধানে জানা যায়, ২০২১ সালের ১২ই অক্টোবর সুনামগঞ্জ পৌরসভা এলাকার ডাঃ শাম্মী এক আশা ও স্বপ্নময় জীবনের আশা নিয়ে পারিবারিক ভাবে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। তার স্বামী একজন ব্রিটিশ নাগরিক এবং পিএইচডি স্কলার। বিয়ের পর কিছু দিন তারা সুখী দম্পতি হিসাবে সংসার করেন। কিছু দিন অতিবাহিত হওয়ার পর ডাঃশাম্মী বুঝতে পারেন তার স্বামী বিবাহকালীন সময় তাকে মিথ্যা বলেছিলেন। তার কোনো চাকরি, সঞ্চয় বা সম্পত্তি ছিল না। এই বিশ্বাসঘাতকতার পরেও ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধ থেকে স্বামী আলী আহমদকে সমর্থন দিয়েছিলেন ।
এক সময় ড. রুবেল বাংলাদেশে সফরে আসেন তার পরকিয়া প্রেমিকা রুবাইয়া নীঝুমের সঙ্গে দেখা করার জন্য। উল্লেখ্য যে,এই সময় শুরু করেন স্ত্রীর প্রতি অবহেলা যা তার স্ত্রীর অনুভূতি এবং মর্যাদার সম্পূর্ণ অবজ্ঞা। এই আচরণে তাদের সম্পর্কের ধ্বংসের সূচনা হয়। তার স্ত্রীর মতে, রুবাইয়া নীঝুমই তাদের স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক বিচ্ছেদের মূল কারণ।
ড. রুবেলের নিকট আত্মীয় নাম প্রকাশ না করা শর্তে জানান, রুবেল প্রায় ২বছর যাবত রুবাইয়া নীঝুমকে রুবেল নিজ খরচে লন্ডনে নিয়ে একসঙ্গে বসবাস করছেন। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, একজন শিক্ষক যদি এমন একটি সম্পর্কের মধ্যে জড়িয়ে পড়েন, তাহলে তার ছাত্রদের কী ধরনের মূল্যবোধ এবং নীতি শেখানো সম্ভব? একজন শিক্ষক হিসেবে, তার ব্যক্তিগত জীবন তার পেশাগত জীবনকে কীভাবে প্রভাবিত করছে তা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠছে।
এইদিকে তার স্ত্রী সত্যকে উন্মোচন করতে এবং তার ওপর চলমান চরম মানসিক নির্যাতন এবং অবিশ্বাসের প্রতিকার চাইছেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট।
ডাঃশাম্মী জানান, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে, তার স্বামী লিডস ট্রিনিটি ইউনিভার্সিটিতে একটি চাকরি পেয়েই মানসিকভাবে তার উপর অসহনীয় চরম নির্যাতন শুরু করেন। তার স্বামী তাকে অপমান করতেন এবং তার ব্যক্তিগত জীবন ও পেশাকে খাটো করতেন। তখন তিনি সিলেট শহরে অবস্থিত একটি মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটালের ইউরোলজি ডিপার্টমেন্টের অ্যাসিস্ট্যান্ট রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।যা অত্যন্ত সম্মানজনক একটি সেবামূলক পদ। কিন্তু তার স্বামীর মিথ্যা অভিযোগ, ভুয়া সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল তৈরি করে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করা এবং অবিরাম অপমান তার কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ বিষাক্ত করে তোলে।
স্বামীর এই অমানবিক কর্মকান্ডে তার কর্মক্ষেত্রে তার সুনাম ধ্বংস করে দেয় এবং সহকর্মীদের মধ্যেও সন্দেহের চোখে দেখা শুরু হয়। এই অপমান সহ্য করা কঠিন হয়ে পড়ে। তার মানসিক অবস্থা এতটাই খারাপ হয় যে তিনি বিষণ্নতায় ডুবে যান এবং আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।আত্মহত্যার বিষয়ে ভয় পেয়ে যায় স্বামী রুবেল।
২০২২ সালের আগস্টে, তার স্বামী বাংলাদেশে ফিরে এসে তাকে নতুন করে জীবন শুরু করার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই তার আচরণ আবার বদলে যায়।যানা যায় যে, ডঃ রুবেল তার পরিবারের একমাত্র উপার্জন ক্ষম ব্যক্তি হওয়ায় তার স্ত্রী কে দেশের বাহিরে নিয়ে গেলে রুবেলের মা,বড় ভাই সহ বড়ভাই এর সংসার দেখাশোনা করবে না মর্মে তার পরিবারের ধারণা হওয়ায় তার মা ও বড় ভাই এর ইচ্ছায় তাদের সম্পর্ক বজায় রাখতে না চাওয়ায় তিনি আলাদা থাকতে শুরু করেন। এক মাস বাংলাদেশে থেকে তিনি লন্ডনে ফিরে যান। যাওয়ার দিন সকালে তিনি তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। ডাঃ শাম্মীর বাবা-মা তাকে নিকটস্থ হসপিটালে নিয়ে যান তিনি বেশ কিছুদিন চিকিৎসারত ছিলেন।
তারপর থেকে ডঃ রুবেল যেন ভুলে যান যে তিনি বিবাহিত। তিনি ফোনে তার স্ত্রীকে ব্লক করে দেন এবং কোনো যোগাযোগ রাখেন না। তার চাচা অপরিচিত নম্বর থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করেন, তখন তিনি বলেন, “আমি তাকে তালাক দেব না, তবে তার সঙ্গে থাকবও না। সে তার জীবন যাপন করবে, আর আমি আমার মতো। আমরা আলাদা দেশে থাকব। আমি এখন তাকে লন্ডনে নিয়ে যেতে চাই না।”
২০২৩ সালের মার্চে, মানসিক নির্যাতন এবং কর্মক্ষেত্রে অপমানের কারণে তিনি চাকরি ছাড়তে বাধ্য হন। অতিরিক্ত চাপের ফলে তার বাবা স্ট্রোক করেন। তিনি তার বাবাকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। বাবার প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে তিনি আবার তার ক্যারিয়ার শুরু করার চেষ্টা করেন। দুই মাস পর, তিনি একজন জেনারেল প্র্যাকটিশনার হিসেবে আবার কাজে ফেরেন।তিনি একজন চিকিৎসক হিসেবে সেবা ই ধর্ম মনে করে অনেক বড় স্বপ্ন নিয়ে চিকিৎসা সেবায় ফিরে আসেন।
এরপরও তিনি তার দায়িত্ববোধ থেকে স্বামীর কাছে মেইল করেন এই বলে যে তার সাথে সংসার করার ইচ্ছা না থাকলে ডিভোর্স দিতে এবং তার জীবন ও ক্যারিয়ার নষ্ট না করার অনুরোধ করেছেন। তার স্বামী তার ইমেইল ও ফেইসবুক আইডির পাসওয়ার্ড জানতেন। পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে ইমেইল ও ফেইসবুক দিয়ে ডাঃ শাম্মীর কর্মস্থলের সিনিয়র ও জুনিয়র কলিগদেরকে বিভিন্ন আপত্তিকর প্রশ্ন করে বিভিন্ন ভাবে তাকে হয়রানি করেন।
একপর্যায়ে তিনি ইমেইল এর মাধ্যমে স্বামীর নিকট ডিভোর্স চায়, কিন্তু তার স্বামী কোনো উত্তর দেননি।
ডাঃশাম্মী উচ্চ আকাঙ্খা নিয়ে চিকিৎসা সেবায় নিজেকে মনোনিবেশ করার জন্য বর্তমানে চিকিৎসা শাস্ত্রে এম.এস সি ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করার জন্য যুক্তরাজ্য অবস্থান করছেন। তিনি আরো জানান তার স্বামী ড.আলী আহমদ রুবেল বর্তমানে একদিকে বাংলাদেশে তার আত্মীয় স্বজন দ্বারা ডাঃ শাম্মীর পরিবারকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি প্রদর্শন, অন্যদিকে লন্ডনে হয়রানী করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।ডাঃ শাম্মী যুক্তরাজ্যে ভয় এবং আতংকের মধ্যে অবস্থান করছেন। তিনি বৃটিশ সরকার ও যুক্তরাজ্যে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহযোগিতা কামনা করছেন।