আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের প্রার্থী হিসেবে চাটখিল উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মো. বেলায়েত হোসেন তপাদার আজ শনিবার দুপুর ২টায় স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন।
সভায় বেলায়েত হোসেন সাংবাদিকদের জানান, ১৯৯১ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতির মাধ্যমে রাজনৈতিক জীবন শুরু করার পর থেকে অদ্যাবধি কোন নির্বাচনে দলীয় প্রতিক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পাননি। ফলে দলের মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে সকল নির্বাচন থেকে নিজে সরে দাঁড়ান। এবং দলীয় প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিতে কাজ করেন।
তিনি আরো জানান, তার রাজনৈতিক জীবনে বহু হামলা, মামলা, কারাবরণের ইতিহাস থাকলেও দলের সুসময়ে তার অতীত ত্যাগের মূল্যায়ন করা হয়নি বলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে অনেকেই বলেন, এমন ব্যক্তিকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া ঠিক নয় বা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা উচিত নয়, যাকে জনসাধারন প্রয়োজনে উপজেলা পরিষদে পায় না। যিনি চেয়ারম্যানের চেয়ার শূন্য রেখে নিজের ব্যবসায়ীক কাজে দেশ-বিদেশে থাকেন। তাকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করা হলে জনগণ তার নাগরিক সেবা যথাযথ পায় না এবং অতিতেও পায়নি।
মো. বেলায়েত হোসেন তপাদার ১৯৯১ সালে ছাত্রলীগে যোগদান করে। পরবর্তীতে ১৯৯৩/৯৪ চাটখিল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, ১৯৯৫/৯৬ কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি, ২০০৭-২০১২ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, ২০১২-২০১৩ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি, ২০১৪ জেলা যুবলীগের সদস্য, ২০১৪-২০২৩ উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সবশেষ ২০২২ সালের নভেম্বরে চাটখিল উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলে সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি তার রাজনৈতিক জীবনের ৩৩ বছর দলের জন্য সবোর্চ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন বলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা দাবি করেন।
মো. বেলায়েত হোসেন তফাদার রাজনীতির মাধ্যমে সমাজ সেবার পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা ও সামাজিক এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত থেকে নিরলসভাবে সমাজ সেবা করে যাচ্ছেন। তিনি চাটখিল পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্রে পরিচালিত ভীমপুর বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কারিগরি কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং চাটখিল কামিল মাদ্রাসার গভনিং বডির বিদ্যোৎসাহী সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এছাড়া তিনি চাটখিল কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার জামে মসজিদের সভাপতি এবং মাওলানা নুর মোহাম্মদ কল্যাণ ট্রাস্ট ও এতিমখানার পরিচালনা বোর্ডের সদস্য। তাছাড়াও তিনি বহু সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন।
মো. বেলায়েত হোসেন তপাদার জানান, তিনি ২০০১ সালে চার দলীয় জোট সরকারের আমলে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা মূলক ১৭টি মামলায় ৬ বার কারাবরণ করেন। তার উপর ৩ বার হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করা হয়েছে। তিনি সেই হামলায় ঘাড়ে ও মাথায় আঘাত প্রাপ্ত হন। আজও সেই আঘাতের ব্যথায় তাকে কাতরাতে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক জীবনের ৩৩ বছর তিনি চাটখিলের মাটিও মানুষের সঙ্গে ছিলেন। তিনি সুযোগ থাকা শর্তেও ইউরোপ-আমেরিকায় চলে যেতে পারতেন
কিন্তু অর্থবিত্তে তাকে আর্কষ্ট করেনি। তাই তিনি চাটখিলের মাটি ও মানুষের সঙ্গে ছিলেন এবং আমৃত্যু থাকবেন। প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, তার রাজনৈতিক জীবনে দলীয় প্রতিক নির্বাচন করার এবং জনপ্রতিনিধি হওয়ার সুযোগ হয়নি। সব সময় দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে তিনি নিজে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। তবে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তাকে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বারবার অনুরোধ করায় তিনি এবার উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আগ্রহী হয়েছেন।
বেলায়েত হোসেন আশা প্রকাশ করেন দলীয় নেতৃবৃন্দ ও তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় সর্বসাধারনের ভালোবাসা তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবেন। ইতোমধ্যে তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা-এলাকায় গণসংযোগ শুরু করেছেন।
উল্লেখ্য মো. বেলায়েত হোসেন তপাদার চাটখিল পৌর শহরের সুন্দরপুর বাঁশি তপাদার বাড়ির প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতা মরহুম নুরুল আমিন ও জাহানারা বেগমের ছেলে। তিনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মের্সাস বেলায়েত এন্ড ব্রার্দাসের স্বত্তাধিকারী। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক।