শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:১৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
জগন্নাথপুরে পুরাতন বাঁধের মাটি কেঁটে চলছে ২৭নং ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ  মধুপুরে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হলো বড়দিনের উৎসব  বাগাতিপাড়ায় আনন্দমুখর পরিবেশে বড়দিন উৎসব অনুষ্ঠিত দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে বহু ওলী আউলিয়াদের আত্মত্যাগ,বড় ভূমিকা পালন করছে, পীর গোলাম ইস্তারশিদ কাদরী মধুপুরে অবৈধভাবে মাটি কাঁটার অপরাধে ৫০হাজার টাকা জরিমানা  নোয়াখালীতে মসজিদের ইমাম ও খতিবকে বিদায়ী সংবর্ধনা সরিষাবাড়ী সেবা ও কল্যাণ সংস্থার উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ শ্যামনগরে রাষ্ট্রকাঠমো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নে যুব দলের উদ্যোগে লিফলেট বিতরণ বুড়িগোয়ালিনীতে ইউনিয়ন আমীরের শপথ ও ইউনিয়ন টিম গঠন অনুষ্ঠিত  জাতীয় শিশুকিশোর সংগঠন ফুলকুঁড়ি আসর কোম্পানীগঞ্জ শাখা কর্তৃক আয়োজিত

ডুমুরিয়া মৎস্য অফিসে একুরিয়ামে জীবন্ত বাহারী রং এর মাছ গুলো যখন সাঁতার কাটে তখন দেখতে ভালই লাগে।

শেখ মাহতাব হোসেন, ডুমুরিয়া, খুলনাঃ
  • Update Time : মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৯৬ Time View

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা কার্যালয়ে একুরিয়াম ফিস  দেখতে সুন্দর লাগছে। আমাদের শহর কেন্দ্রিক জীবনধারায় ড্রইং রুমে একটি একুরিয়াম সৌন্দর্য্য বাড়িয়ে তোলে নিঃসন্দেহে। ঘরের কোণের একুরিয়ামে জীবন্ত বাহারী রং এর মাছ গুলো যখন সাঁতার কাটে তখন দেখতে ভালই লাগে। একুরিয়ামে মাছ পালার শখ অনেকেরই আছে। বাহারি বিভিন্ন মাছ কিনে এনে ঘরের এক কোণে বড়, ছোট, মুখ খোলা গোলাকার একুরিয়াম বা বন্ধ ঘরের মতো দেখতে একুরিয়াম মানুষ মাছ পালার জন্য কিনে থাকেন, এটা তার শৌখিনতারই পরিচায়ক। কিন্তু এই শৌখিনতার পাশাপাশি চলে আসে সেই জিনিসটার প্রতি যত্ন এবং রক্ষনাবেক্ষন। যার জন্য মানুষকে অনেক সময় দিতে হয় সেটার পিছনে।

যেহেতু একুরিয়াম যত্ন করা একটু ধৈর্যের ব্যাপার, তাই যারা বাড়ীতে একুরিয়ামে মাছ পালেন তারা অনেকেই একসময় বিরক্ত হয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। বারবার পানি বদলে দেয়া, মাছের সময়মত খাবার দেয়া এসব ঝামেলা অনেকেরই কয়দিন পরে আর ভালো লাগে না। অযত্নে অনেক সময় ভেঙে যায় একুরিয়াম বা মাছও মরে যেতে পারে। তখন সেই ভাঙ্গা একুরিয়ামের জায়গা হয়ে বাড়ির স্টোররুমে। তবে এর পিছনে আরও কিছু কারণ আছে। বেশীরভাগই মানুষ একুরিয়ামের ব্যাপারে সঠিক তথ্য পায়না। অনেকটা বেসিক সেন্সের উপর ভিত্তি করে মাছ পালেন একুরিয়ামে। শেষে মাছ অসুখ হয়ে মারা যায়। অনেকে তখন মন খারাপ করেই একুরিয়ামে পাছ পালার শখ বাদ দেন। তাই কীরকম একুরিয়াম কিনবেন , কি মাছ রাখতে পারেন, মাছের ও একুরিয়ামের যত্ন কিভাবে করবেন, মাছের অসুখ হলে কিভাবে বুঝবেন তার বিস্তারিত ফিচারে তুলে ধরা হলো. কেমন একুরিয়াম কিনবেন আপনি যখন একুরিয়াম কেনার সিদ্ধান্ত নিবেন তখন প্রথমেই আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে আপনার ঘরের মাপ। কারণ বেশী বড় বা বেশী ছোট একুরিয়াম আপনার ঘরে বেমানান লাগতে পারে। ধরে নিলাম একটি সাধারন ঘরের মাপ হতে পারে ১০ ফুট বাই ১৫ ফুট। আর তাই এইধরনের রুমে ২ফুট বাই ১ফুট বা ২.৫ফুট বাই ১.৫ফুট একুরিয়ামই আদর্শ। কাঁচের পুরুত্ব এখানে একটা ব্যাপার। তবে বড় একুরিয়ামের ক্ষেত্রে পুরু কাঁচ নেয়াটাই ভালো।

খুলনার বিভিন্ন এলাকায় একুরিয়ামের বেশ অনেক দোকান আছে। তবে এর সমাহার দেখা যায় কাঁটাবনে। একুরিয়ামের ষ্ট্যান্ড সহ একটা (উল্লেখিত সাইজের) একুরিয়াম আপনি এক হাজার টাকায় কিনতে পারবেন। তারপর তাতে বিভিন্ন উপাদান যোগ করতে হবে। যেমন এখানে লাগবে পাথর কুঁচি, ফিল্টার, এয়ার মোটর, রাবারের ফ্লেক্সিবল পাইপ, এয়ার এক্সিকিউটর। আপনি আপনার একুরিয়ামে আলো জ্বালাতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনি এনার্জি সেভিং বাল্ব ব্যাবহার করতে পারেন। আরেকটু ভালো হয় হ্যালোজেন বাল্ব পাওয়া যায় যেটা দেখতে একেবারে চিকন এবং আলোটাও কিছুটা বেগুনী। যেটা একুরিয়ামের দোকানে ইউজ করা হয়। যার জন্য মাছের কালার গুলো খুব সুন্দর লাগে বাহির থেকে। আরেকটি জিনিস বেশ প্রয়োজন যেটা আমরা বেশীরভাগই অবহেলা করে যাই। তা হলো একটি ইলেকট্রিক ওয়াটার হিটার। এটা পানিকে মাঝে মাঝে হালকা উষ্ণ রাখে। কারণ মাছ অসুস্থ্য হয়ে পড়ে বেশী গরম ও ঠান্ডা পানিতে। যদিও পানি বেশী গরম হওয়ার সম্ভাবনা নাই তবে ঠান্ডা হওয়ার সম্ভাবনা আছে, বৃষ্টির দিনে বা শীতের দিনে। এক্ষেত্রে একটা ওয়াটার হিটার ১০০-৫০০ টাকায় পাওয়া যায়। ৫০০ টাকায় পাবেন অটো ওয়াটার হিটার। একুরিয়ামের মাছ ও যেখানে পাওয়া যাবেঃ কাঁটাবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মার্কেট অ্যাকুরিয়ামের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত।

ডুমুরিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন অ্যাকুরিয়ামে মাছ পুষতে যা যা দরকার তার সবই পাওয়া যায় এখানে। এর মধ্যে আছে অ্যাকুরিয়াম বক্স, মাছ, খাবার, ওষুধ প্রভৃতি। ঢাকার নিউমার্কেট, বনানীসহ বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে কিছু অ্যাকুরিয়াম-সামগ্রীর দোকান আছে।

ডুমুরিয়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সোহেল মোঃ জিল্লুর রহমান রিগান বলেন

অ্যাকুরিয়ামে পোষার জন্য কাঁটাবনে যেসব মাছ পাওয়া যায় তার মধ্যে রয়েছে সিলভার শার্ক, এলবিনো শার্ক, টাইগার শার্ক, রেইনবো শার্ক, টাইগার বার্ব, রোজি বার্ব, গোল্ড ফিশ, অ্যাঞ্জেল ফিশ, ক্যাট ফিশ, সাকিং ক্যাট, কমেট, মলি, ফলি, গপ্পি, ব্লু-গোরামি, সিলভার ডলার, অস্কার, ব্লু-আকারা, টেলিচো, কৈ কার্প, টাইগার কৈ কার্প, ব্ল্যাক মুর, সোটটেল, প্লাটি, এরোনা, ফ্লাওয়ার হর্ন, হাইফিন নোজ, ব্ল্যাক গোস্ট, সিসকাসসহ বিভিন্ন প্রজাতি। এসব মাছ প্রতিজোড়া ৫০ থেকে ৭০০ টাকায় কেনা যাবে। আবার কিছু মাছের দাম বেশিও হয়। তবে দাম অনেকটা নির্ভর করে ছোট-বড় ও প্রজাতির ওপর। মাছের রোগ ও তার চিকিৎসা আমাদের দেশের আবহাওয়ায় যে কয়েকটি রোগ হতে পারে- লেজ পচা: লেজ পচা কোন নির্দিষ্ট অসুখ না তবে কোন শক্ত অসুখের পূর্ব লক্ষণ। এই রোগে মাছের লেজে বা পাখনায় একটা ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এটি একটি ব্যাক্টেরিয়াল ইনফেকশন। ব্যাক্টেরিয়াল ইনফেকশন হলে সেটার প্রকোপ অনেক বেশী হয়। এর ফলে লেজ আস্তে আস্তে নষ্ট হয়ে যেতে থাকে। শেষে এমন আকার ধারন করে যেটা দেখতে অনেকটা তুলার শেষ অংশের মত মনে হয়। এই রোগ ধীরে ধীরে দেহেও আক্রমন করে। চিকিৎসাঃ যদি দেখা যায় একুরিয়ামের কোন মাছ এই রোগে অল্প একটু আক্রান্ত তখন সেটাকে তুলে অন্য জারে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়াই ভালো। আর যদি এমন হয় যে বেশীভাগ মাছই একই অবস্থা। তবে সাথে সাথে পানি চেইঞ্জ করে সেগুলোর চিকিৎসা দিতে হবে। এক্ষেত্রে ভালো কাজ করে টেট্রাসাইক্লিন। তবে যদিও টেট্রাসাইক্লিনটা একটু কড়া মাত্রার ঔষধ তাই কম ইনজুরি হলে ডক্সি-সাইক্লিন ও ক্ষেত্র বিশেষে অক্সি-সাইক্লিন গ্রুপের যেকোন ঔষধ দিলেও চলে। একটি ক্যাপসুল খুলে তার পাওডারটি পানিতে ফেলে দিতে হবে। এভাবে প্রায় ছয়/সাত দিন রেখে আবার পানি চেইঞ্জ করতে হবে। হোয়াইট স্পট বা আইচঃ কখনও কখনও মাছের গায়ে একরকম সাদা দাগ দেখা যায় সেটাকে আইচ বলে। মূলত এটা একটা প্যারাসাইট (পরজীবি) এটি একটি মারাত্বক রোগ। আক্রান্ত মাছের সারা গায়ে খুব তাড়াতাড়ি এটা বিস্তার করে। এবং গায়ে লেগে থাকে। ধীরে ধীরে মাছ নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এই রোগে মাছের মৃত্যু হতে পারে। এই পরজীবিগুলোর জীবনচক্র প্রায় দশদিনের মত। চিকিৎসাঃ ফরমালিন, ক্লোরাইড লবন এবং মেলাসাইট গ্রিন এই রোগের উপশমের জন্য ব্যাবহার করতে হয়। আক্রান্ত মাছকে তুলে ক্লোরাইড সল্ট ও ফরমালিন মেশানো পানিতে কিছুক্ষণ চুবিয়ে রাখতে হয়। দিনে দুইএকবার করলে এর ভালো ফল পাওয়া যায়। কিন্তু এই রোগের চিকিৎসা সাধারনত তিনদিন করলেই এর ফলাফল পাওয়া যায়। তবে একেবারে নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়াই ভালো। সুস্থ্য মাছের জন্য একটি সুস্থ্য একুরিয়াম প্রয়োজন। তারজন্য প্রয়োজন নিয়মিত যত্ন করা। পানি কিছুদিন পর পর বদল করা। নতুন পানিতে পরিমান মত একুরিয়াম সল্ট দিতে হবে। আপনি ট্যাপের পানিই দিতে পারেন। আর যেসব স্থানে পানিতে আয়রন বেশী সেসব জায়গায় পানি ফুটিয়ে ঠান্ডা করে থিতিয়ে দিতে পারেন। পানি পরিবর্তনঃ • নিজেই বাসায় বসে পানি পরিবর্তন করতে চাইলে ট্যাপ থেকে অ্যাকুরিয়াম পর্যন্ত একটি রাবারের পাইপ ও অ্যাকুরিয়ামের পানি বের করার জন্য প্রায় পাঁচ ফুট লম্বা রাবারের পাইপ সংগ্রহ করতে হয়। • পানি পরিবর্তন করে নেওয়ার আগে অ্যাকুরিয়ামের মাছ অন্য একটি পানি দেয়া পাত্র/জারে রাখতে হয়। • অ্যাকুরিয়াম থেকে মাছ বের করে আনার জন্য নেট ব্যবহার করতে হয়। মাছ বের করে আনতে হাত ব্যবহার না করাই ভালো। • পাঁচ ফুট লম্বা পাইপ (ওয়াটার লেভেল) অ্যাকুরিয়ামের তলদেশে লাগিয়ে পানি বের করে নিতে হয়। • সব পানি বের হয়ে গেলে পাইপ দিয়ে নতুন পানি অ্যাকুরিয়ামে দিতে হয়। • অ্যাকুরিয়াম বড় হলে মাঝে মাসে একবার ও ছোট হলে ১০/১৫ দিনের মধ্যে একবার পানি পরিবর্তন করতে হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102