পার্বত্য বান্দরবানের লামা উপজেলায় কৃষকের খামারে হামলা, ভাঙচুর করে প্রায় একটন ধান ও ৭০ কেজি বীজের আলু লুট করে নিয়েছে। একই সময় খামারের মালিক বিধবা কৃষাণী শিউলী রানী দে ও তার ছেলেকে বেদম প্রহার করে। লুটেরা জবরদখলের পায়তারাকারীদের হামলায় শিউলী রানী দে এর ডান হাতের দু’টি হাড় ভেঙে যায়। আহত নারী বর্তমানে কক্সবাজার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ১১ ডিসেম্বর লামা সদর ইউনিয়নের মেরাখোলা হিন্দুপাড়া গ্রামে এই বর্বরোচিত ঘটনা ঘটে। এই ব্যাপারে লামা থানায় অভিযোগ করেছে আহত শিউলি রানী দে এর ছেলে স্বপন কুমার দে। অভিযোগে প্রকাশ, ‘২৯৫নং লামা মৌজা- ২০২নং হোল্ডিং এর মূল প্রজা মনোরঞ্জন দে এর নিকট হইতে ০.২০ (বিশ শতক) একর ২য় শ্রেণির জমি খরিদাসূলে মালিকানা লাভ করে সেখানে খামার বাড়ি নির্মাণ করতঃ দীর্ঘ ২০/২১ বছর যাবত বিবাদহীনভাবে সন্তানাদিসহ ভোগদখলে স্থিত আছে কৃষাণী শিউলী রানী দে। কিন্তু ওই জায়গার প্রতি অভিযুক্তরা লোভের বশিভূত হয়। তারা দীর্ঘদিন ধরে জায়গাটি জবর-দখলের পায়তারা করে আসতেছিল। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে মামলা মোকদ্দমা চলমান আছে। এই ঘটনার আগেও জবর দখলকারীরা শিউলী রানীর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরকে বিভিন্ন প্রকার হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল, যার ফলে গত ১৪-০৮-২০২৩ তারিখ লামা থানায় একটি জিডি নং- ৪৭১ করেছিল। যা বর্তমানে ননজিআরা মামলা নং- ২০/২০২৩ ইং। এর পরও জোর দখলদার গ্রুপ দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রান্তিক বিধবা কৃষাণীর খামার বাড়িতে হামলা করে সম্পূর্ণ স্থাপনা ভেঙ্গে দেয়। একই সময় খামার ঘরে মজুদকৃত ৮০ আড়ি ধান, বীজের ৭০ কেজি আলু যাবতীয় মালামাল লুটতরাজ করে নিয়ে যায়। বাধা দিতে গেলে শিউলী রানী দে ও তার ছেলে তপন কুমার দেকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে। এতে শিউলী রানীর ডান হাতের জোড়া হাড় ভেঙে ও দু’জনের শরীরে কাটা-চেড়া জখম হয়। পরে স্থানীয়রা আহতদেরকে প্রথমে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে আশংকাজনক অবস্থায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করেন’। এদিকে হামলার শিকার শিউলী রানী ও তার ছেলে হসপিটাল চিকিৎসা নেয়াকালীন ১১ ডিসেম্বর রাতে হামলাকারীরা দলবদ্ধ হয়ে অস্ত্রের মহড়া দিয়ে সেখানে একটি ঘর নির্মাণ শুরু করে দেয়। লামা থানা পু্লিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, অভিযোগ পেয়ে পুলিশ পাঠিয়েছি এবং জোর করে ঘর নির্মাণে বিরত থাকার জন্য বিবাদীদেরকে বলে দেয়া হয়েছে। এদিকে বিবাদীদের আস্ফালন দেখে স্থানীয়রা জানান, পুলিশি ভূমিকা রহস্যজনক হেতু হামলাকারীরা সকল আইন কানুন অমান্য করে বিধবা কৃষাণীকে হত্যার চেষ্টা করে এবং রাতারাতি জোর করে ঘর নির্মাণের সুযোগ নিচ্ছে।অভিযুক্তরা হচ্ছে; ১। অমিয় রানী বসাক, স্বামী- মৃত মনোরঞ্জন বসাক, ২। সমর বসাক, ৩। অমর কান্তি বসাক, ৪। অঙ্গক বসাক, সর্বপিতা- পিতা- মৃত মনোরঞ্জন বসাক, ৫। প্রিয়াংকা বসাক, স্বামী- সমর বসাক, সর্বসাং- মেরাখোলা পাড়া, ২৯৫নং লামা মৌজা, ৩নং ওয়ার্ড, ২নং লামা সদর ইউনিয়ন, থানা-উপজেলা- লামা, বান্দরবান পার্বত্য জে সহ অজ্ঞতনামা আরো ৫/৬ জন। প্রান্তিক কৃষাণীর ন্যায্য অধিকার ও এলাকার আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টির প্রতি গুরুত্বসহকারে নজর দেয়ার দাবি করেছেন স্থানীয়রা।