নড়াইলের কালিয়া উপজেলা ৩নং হামিদপুর ইউনিয়ন বিষ্ণপুর গ্রাম নবগঙ্গা নদীর কুল ঘেষে সারিবদ্ব ভাবে গোড়ে তুলেছে কয়লার ১৪ টি ভাটা এর মধ্যে, ৪ নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার মো. আসলাম মোল্লার ৫টি, এবং মো : তরিকুল মোল্যার ৯টি। সরকারি কোনো অনুমোদন ছাড়া সেখানে প্রতিদিন কয়েক হাজার মণ কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করা হচ্ছে।
বর্তমান নদীর তীর ঘেঁষা এই এলাকাটি এখন স্থায়ীভাবে কয়লা ভাটার আড়ত হিসেবে পরিচিত। রাতদিন ২৪ ঘন্টা এই কাঠ পোড়ানোর ধোঁয়ায় নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ, অতিষ্ট এলাকাবাসী,সহ স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী। বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে আশ-পাশের এলাকা। ছোট বড় বহু গাছপালা ধোঁয়ার কারণে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে। ভাটার উল্টো দিকে যাদের বসবাস, তাদের বাড়িতে ধোঁয়া প্রতিরোধে টানানো হয়েছে বিশাল পর্দা। কিন্তু তাতে কোন সমস্যা সমাধান হচ্ছে না বলে এলাকাবাসী দুর্ভোগের কথা গোপনে জানালেও কিন্তু কেউ ভয়ে ভিডিও বক্তব্য দিতে চায়নি। অন্তত ১৫ জনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ইতোমধ্যে এলাকার পরিবেশে বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। এলাকার শিশু ও বৃদ্ধা মানুষের শ্বাসজনিত সমস্যার মাত্রা বেড়েই চলেছে। দুই জন কয়লার ভাটা শ্রমিক গ্রামের জব্বার মোল্লা (৬৬) এবং মোশা বিশ্বাস (৪৫) ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেছে এবং ভাটার পাশের বাসিন্দা আসমত শেখ বাড়িঘর বিক্রি করে অন্যত্র চলে গেছেন। বর্তমান মেম্বার রাজু বিশ্বাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন ধোঁয়ার কারণে মোঃ মফিজুর মোল্যা (৪০) মোঃ বাবুল মোল্যা (৪৩) মোঃ আরিফ শেখ (৪৭) মোঃ গিয়স মোল্যা (৪৫),রিফোয়েত মোল্যা (৪৮) নামের ব্যক্তিরা বসত ভিটা বিক্রয় করে অন্য স্থানে চলে যাবে বলে তারা আমাকে জানায়।
ভাটার মালিক ও ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য আসলাম মোল্লা ও তরিকুল মোল্লা নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন,সরকার কোন অনুমোদন দেয় না,সারা দেশের মানুষ চালাই খাচ্ছে সেই ভাবে চালাই খাচ্ছি,এবং তিনি সাংবাদিকদের নিউজ করতে নিষেধ করেন।
কালিয়া উপজেলা ৩নং হামিদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পলি বেগম বলেন, আমি কোন অনুমতি দেয়নি এবং আপনারা যেটা ভালো বোঝেন সেটা করেন আমি এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে না পারার কারণ এটা এলাকা ভিত্তিক বিষয় এবং প্রতিপক্ষের কারণে এড়িয়ে চলি বলে জানান।
কালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুনু সাহা বলেন,এ বিষয়ে আজ পর্য়ন্ত কোন অভিয়োগ পায়নি, সাংবাদিকদের মাধ্যমে আজ জানতে পারছি। লিখিত অভিয়োগ পেলে অবশ্যই আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান।
নড়াইল জেলা সহকারী পরিচালক পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল মালেক মিয়া বলেন, কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরী করা সরকার কোন অনুমোদন দেয়নি এবং বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, এ বিষয়ে অতিদ্রুত আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান।