শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৫৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
মোহনপুরে সরকারি ডিগ্রি কলেজে নবীন বরণ বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মধুপুরে তারুণ্যের উৎসব শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে  বিলাইছড়িতে ত্রৈ-মাসিক ইয়ুথ সভা বসতিতে ‘পানির সততা’ নিশ্চিত করতে ৪ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত লালপুরে গরুর ট্রাক সহ গরু চোর আটক ডুমুরিয়ায় ৩২ দলীয় কেরাম টুর্ণামেন্ট ২০২৫ ‌উপলক্ষে আলোচনা সভা ও উদ্বোধন। প্রতাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বাচ্চু চন্দ্রগঞ্জ কারামতিয়া কামিল মাদ্রাসায় সবক ও দোয়া অনুষ্ঠিত গন উন্নয়ন ও নাগরিক পরিসেবা দিতে দুয়ারে উস্তি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অ্যাডভোকেট মিকাইল মোল্লা ডুমুরিয়ায় চিংড়িতে জেলি পুশ,করার অপরাধে ১জনকে৩মাসের জেল

ভয় ( ছোট গল্প) সুব্রত কুমার

ভয় ( ছোট গল্প) লিখেছেন, সুব্রত কুমার
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১২ মার্চ, ২০২৪
  • ৭৩ Time View

ভয়
সুব্রত কুমার

ভয়!
ভয় আসলেই এক ভয়ংকর বিষয়। ভয় কতটা ভয়াবহ তা কেবল ভুক্তভোগী-ই উপলব্ধি করতে পারে। ভয় মানুষকে তিলে তিলে তিল তিল করে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়ে ভয় দেখাতে দেখাতে ভয়াবহ ভাবে বিরক্তিতে ফেলে ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে। যার ফলাফল সাফল্যে বিরাট বিপত্তি। ভয় মানুষের হৃদয়কে এমন ভাবে আচ্ছন্ন করে যে- মানুষের হৃদয়ের সমস্ত সম্ভাবনা তখন ভয়ের মেঘাচ্ছন্নতায় ঢেকে গিয়ে হৃদয় হয়ে ওঠে কেবল চুড়ান্ত ভয়াগার- বিভীষিকাময়। ভয় জয়ের পথে যেহেতু বিরাট বিপত্তি, সেহেতু পরাজয় তখন দোয়ারে এসে কষাঘাত করতে থাকে। আর তখন দরজা খুললেই সমস্তই শেষ! তখন আমাদের উত্তর দায়িত্ব কেবল শক্ত করে কপাট এঁটে পরিস্থিতির মোকাবেলা করা। আর এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের কিছু কলাকৌশল তো অবশ্যই থাকবে। যেহেতু সমস্যা থাকলে সমাধান থাকবে, এটাই ধ্রুব সত্য। সুতরাং ভয়কে পরাস্থ করার সেইসমস্ত কলাকৌশল হৃদয়ে ধারণ করতে পারলেই  কেবল ভয় থেকে পরিত্রাণ পেয়ে জয়ের পথে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।

সমাজবিজ্ঞানী ড. মারগী কের বলেছেন, “ভয়ের কারণ দ্রুত শনাক্ত করা এবং পরিত্রাণের উপায় বের করা জরুরী। এটাই মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে।”

আসলে ভয় চিরন্তন সত্য এক বিষয়। আমরা ভয়কে যতই এড়িয়ে যেতে চাইনা কেন ভয় ক্ষনে ক্ষনে আমাদের হৃদয়কে আচ্ছন্ন করবে এটাই জীবনের চিরাচরিত ধর্ম। মানুষের  যতপ্রকার আবেগ-অনুভূতি আছে, ভয়ও তাদের মধ্যেই অন্যতম এক অনুভূতির নাম। সুতরাং মানুষ হয়ে জন্মালেই আমাদেরকে সেই সমস্ত আবেগ-অনুভূতির মধ্য দিয়ে যেতে হবে এটাই চরম বাস্তবতা। তাই ভয় পাওয়াও অত্যন্ত এক সাধারন-স্বাভাবিক বিষয়। তবে ভয় থেকে মুক্তির কি কোনই দরকার নেই? ভয় থাকবে/আসবে এটা যেমন অবশ্যই বিষয়, ঠিক তেমনই ভয় থেকে মুক্তিলাভও অবশ্য বিষয়। আমি আগেই বলেছি- ভয় মানুষকে তিলে তিলে তিল তিল করে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়ে ভয় দেখাতে দেখাতে ভয়াবহ ভাবে বিরক্তিতে ফেলে ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে। তাই ভয় আমাদের জীনের সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত একটি ক্রিয়া হলেও ভয়কে জয় করাও আমাদের নিত্য কর্মেরই অংশবিশেষ মাত্র। প্রার্থনা বা ধর্মীয় অনুভূতি সকল ক্ষেত্রের মতো এক্ষেত্রেও বিশেষ কার্যকর । প্রার্থনা ধ্যান করার মতো। প্রার্থনায় মনের ভয় বা আতঙ্ক সহজেই দূর হয়ে যায়।

ভয়কে এড়িয়ে নয়-ভয় জয় করতে হয় সাহস দিয়ে। আমাদেরকে প্রচন্ড আশাবাদী হতে হবে! আশাবাদ দেহে কর্টিসল নামের হরমোনের ক্ষরণ ঘটায়। এটি মস্তিষ্কের অ্যামিগডালাকে শান্ত করে তোলে। যেকোনো বিষয়ে আশাবাদী হয়ে ওঠার মাধ্যমে খুব দ্রুত হৃদয় থেকে ভয়ের ভয়াবহ মেঘাচ্ছন্নতা সরিয়ে ফেলা সম্ভব।

“মানুষ ভবিষ্যতের যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুঃশ্চিন্তা করে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে তা ঘটেই না। বাস্তবে সেই ঘটনা যদিও ঘটে তবে তা ততটা দুঃখজনক হয়না, যতটা মানুষ দুঃশ্চিন্তায় কষ্ট পেয়েছে।” -গৌতম বুদ্ধ।

প্রথমে আমাদের ভালো করে লক্ষ করতে হবে, কোন বিষয়গুলোতে আমরা ভয় পাচ্ছি। সেখানে ভয় পাওয়ার মতো কোনো বিষয়ের অস্তিত্ব আদৌ আছে কি নেই, পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে চিন্তা করতে হবে। তবে এখানে উল্লেখ্য থাকে যে- ইতিবাচক চিন্তাধারার আলোকে চিন্তাভাবনা করতে হবে আমাদেরকে। ভয়ে আচ্ছন্ন হৃদয় সর্বদাই নেতিবাচক চিন্তাভাবনায় মগ্ন থাকবে এটাই স্বাভাবিক। সুতরাং আমাদেরকে যেকোন বিষয়ে বিশ্লেষণাত্মক চিন্তাভাবনার ক্ষেত্রে সবসময় সতর্ক থাকতে হবে যে- সেই বিশ্লেষণ যেন অবশ্যই ইতিবাচক ব্যাখ্যার আলোকে বিশ্লেষিত হয়।এক্ষেত্রে অবশ্যই জ্ঞানের পরিধির ব্যাপকতা প্রয়োজন।

আমাদের যথাসম্ভব বই পড়া দরকার। প্রিয় লেখকের বই আমাদের সব ধরনের বিষণ্ণতা, ভয়, আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে। এক্ষেত্রে আরও আমাদের যাঁদের লেখালেখিতে আগ্রহ আছে তাঁরা লেখালেখির মাধ্যমে হৃদয়ের সমস্তপ্রকার নেতিবাচকতা খুব সহজেই দূর করতে পারি। হৃদয়ে যতপ্রকার জড়তা-সংকোচই থাকুক না কেন, হৃদয়ের সেইসব জড়তা-সংকোচ যদি একবার হৃদয় থেকে টেনে হেঁচড়ে কলমের মুখে এনে কাগজের উপর সুন্দরভাবে ঢেলে দেওয়া যায়, তখন মনে হয় হৃদয় থেকেই যেন সমস্তপ্রকার কালিমা ঢেলে বেরিয়ে গিয়ে হৃদয় পেল এক অনাবিল আনন্দ, অবারিত প্রশান্তি।

ভয় দূর করার কিছু বিজ্ঞানসম্মত উপায় আছে। বিভিন্ন তথ্যসূত্র থেকে প্রাপ্ত সেই সব বিজ্ঞানসম্মত উপায়ের কিছু কিছু তথ্য তুলে ধরতে চেষ্টা করছি।

ধীর ও গভীর ভাবে শ্বাসের মাধ্যমে প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স মুক্তি পায় অ্যামিগডালার নিয়ন্ত্রণ থেকে।একমাত্র অক্সিজেন অ্যামিগডালাকে সংকেত পাঠায় যে ভয় পাওয়ার প্রয়োজন নেই। সুতরাং ভয় পেলে গভীর ভাবে শ্বাসপ্রশ্বাসের এই গুরুত্বপূর্ণ কার্যটি খুবই উপকারী।

ক্ষোভ যদিও সুস্থ্যসবল মানুষের জন্য ক্ষতিকর একটি বিষয়, কিন্তু ভয়ার্ত মানুষের জন্য ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠা ভয় নিয়ন্ত্রণের জন্য বেশ কার্যকর একটি বিষয়।ভয় মনে অসহায় ভাব আনে। কিন্তু ক্ষোভ মানুষকে করে তোলে শক্তিশালী।

কাজে মনোনিবেশ করলে যে কোন প্রকার বিষন্নতা, ভয়, হতাশা, প্রভৃতি থেকে খুব দ্রুত ও সহজে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। কাজ জীবনের জন্য আশির্বাদ স্বরূপ।

ভয় থেকে দৃষ্টি সরিয়ে তৃপ্তির উপাদান খুঁজে নিতে হবে। মনোযোগ এক খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যার মাধ্যমেই মূলত আমরা পরিচালিত হই।

আত্মবিশ্বাসের বিকল্প নেই! আত্মশক্তি মানুষকে করে তোলো প্রকৃত শক্তিমান। এক্ষেত্রে বলাই বাহুল্য যে-  আমার এই প্রবন্ধটা লেখার পেছনের মূল কারণটাই আমার ভেতরে একপ্রকার অযাচিত ভয়। আমি এই লেখার মাধ্যমে আমার ভেতরকার অযাচিত একপ্রকার ভয় দূর করারই চমৎকার প্রয়াস চালিয়েছি মাত্র। এবং এই লেখার মাধ্যমে বা কারণে আমি আমার এই ভয়কে জয় করতে সক্ষম হব বলে বিশ্বাস করেছি,  সক্ষম হচ্ছি, এবং অবশ্যই সফল হব বলে বিশ্বাস করি!

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 Coder Boss
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102