মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, লালমনিরহাট প্রতিনিধি: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ৬:৩৩:২১
রহস্যজনকভাবে নিখোঁজের দুই দিন পর অবশেষে উদ্ধার হলো লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার অটোচালক রায়ফুল ইসলাম ওরফে পিস্তলের (২২) লাশ। আর সেই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করে একের পর এক আসামি গ্রেপ্তার করে আলোচনায় এসেছেন হাতীবান্ধা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. জাহিদুল ইসলাম।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়,গত ১৮ আগস্ট দুপুরে জেলার আদিতমারী উপজেলার ভাদাই ইউনিয়নের টেপাটারী’র মৃত মারুফ মিয়ার ছেলে রায়ফুল ইসলাম।তার নিজ বাড়ি হতে খাবার শেষে অটোরিকশা নিয়ে ভাড়ায় চালানোর উদ্দেশ্যে বের হন । এরপর তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। পরিবারের সদস্যরা রাতভর খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো সন্ধান পাননি। পরদিন ১৯ আগস্ট এলাকায় মাইকিং করেও ব্যর্থ হন স্বজনরা।
২০ আগস্ট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের সতী নদীর পাড় থেকে অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেই ছবি ছড়িয়ে পড়লে, নিহতের স্ত্রী ও মা লাশের গেঞ্জি, বেল্ট ও জুতা দেখে শনাক্ত করেন।পরে নিহত রায়ফুলের মা বাদী হয়ে হাতীবান্ধা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পরে লালমনিরহাট সহকারী পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) জয়ন্ত কুমারের নেতৃত্বে মামলার তদন্তভার পান হাতীবান্ধা থানার এসআই জাহিদুল ইসলাম। তিনি দায়িত্ব পাওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে স্থানীয় সোর্স ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মূল আসামীর সহযোগী আকবর আলীকে গ্রেপ্তার করেন। এরপর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আসামীর মূল হোতা আজিজুল ইসলামকে আটক করা হয় ।
তদন্তে বেরিয়ে আসে অটোরিকশা ও ব্যাটারি লুট করার উদ্দেশ্যে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। পরে জেলার পাটগ্রাম উপজেলার আরেক আসামী মিলনের নিকট হতে নিহতের রিকশা এবং শরিফুল ইসলাম ভুট্টা ও নুর ইসলামের নিকট হতে ব্যাটারি উদ্ধার করে পুলিশ এবং তাদেরকে গ্রেফতার করেন।গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা আদালতে স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করে।
এ ঘটনায় তদন্তকারী পুলিশের এসআই জাহিদুল ইসলাম বলেন— নিহতের পরিবারের কান্না থামানো ছিল আমাদের দায়িত্ব। বি-সার্কেল স্যারের সহযোগীতায় দ্রুততম সময়ে আসামি শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে পেরেছি—এটাই আমাদের সাফল্য।
নিহতের মা রহিমা বেগমজানান, আমার ছেলে হারালাম, কিন্তু পুলিশ যদি এর বিচার পাইয়ে দেয়, তবেই শান্তি পাব।যারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে তাদের আমি ফাসি চাই।
এবিষয়ে লালমনিরহাট সহকারী পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) জয়ন্ত কুমার সেন বলেন,এতমধ্যে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেফতারের প্রত্রিয়া চলছে। আশা করছি লালমনিরহাট পুলিশ সুপার স্যারের নেতৃত্বে খুব দ্রুতই বাকি আসামীদের গ্রেফতার করা হবে।
অটোরিকশা আর ব্যাটারির জন্য প্রাণ দিতে হলো ২২ বছরের এক তরুণকে। তবে পুলিশ কর্মকর্তার পেশাদারিত্ব ও তৎপরতায় কয়েক দিনের মধ্যেই উন্মোচিত হলো হত্যার রহস্য, ধরা পড়লো মূল আসামিরা।