রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি উপজেলায় জায়গা ছেড়ে না দেওয়ায় আটকে আছে বাজারে একমাত্র সড়কের কিছু অংশের কাজ। এতে প্রায় সময় ভোগান্তিতে পড়তে হয় বাজারে আসা- যাওয়া হাজারো লোকজন।
এলজিডি ডিপার্টমেন্টের তত্বাবধানে কাপ্তাই কারিগর পাড়া পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার সড়কের কাজ আরকেবিডিপি প্রকল্প নামে ২০২৩ সনে নভেম্বরে কাজ শুরু করা হয়। বিলাই ছড়ি উপজেলার ১ম প্যাকেজ হিসেবে বাজারে পল্টন ঘাট হতে ধূপ্যাচর – দীঘলছড়ি হয়ে মাছকাটাছড়া পর্যন্ত ইউটিমং নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি বাস্তবায়ন করছে। পল্টন ঘাট হতে আরসিসি রাস্তা কিছুটা শুরু করার পর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসের সামনে আসলে এবং বাজারে উপর থেকে আসলে উপজেলা হাসপাতাল রাস্তা পর্যন্ত হতে অনুমানিক ৩০ মিটার পর্যন্ত বাকি রাস্তার প্রকল্পের নির্ধারিত মাপ অনুযায়ী জায়গা না থাকায় ঐ অংশের কাজ বাধা দেওয়ায় আটকে আছে।
জানা যায়,যে,সকল দোকানগুলো জন্য রাস্তাটি আটকে আছে তাদেরক উপজেলা প্রশাসন থেকে একধিকবার নোটিশ প্রদান করলেও তারা সেখান থেকে এখনো ছড়ে দাঁড়ায় নি।যার কারণে একটু জন্য রাস্তাটির কাজ আটকে আছে। এতে পানি বা বৃষ্টি পড়লে ঐ অংশটি কর্দমাক্ত হয়।তাই বাজারে আসা সাধারণ জনগণের ভোগান্তি পড়তে হচ্ছে। নোটিশ প্রদানের পরও প্রশাসনকে উপেক্ষা করে কেন তারা জায়গা ছেড়ে দিচ্ছে না, না দেওয়ায় তাই তাদের খুঁটির জোর নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠছে।স্থানীয়রা জানান, প্রশাসন বার বার বলার পরেও জায়গা ছেড়ে না দেওয়ায় সকল প্রশাসনের প্রতি তাদের বিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ জানান। অনেকে জেলা প্রশাসক মহোদের সুদৃষ্টি কামনা করছেন। তারা আরো জানান, বাজারে রাস্তার ধারে প্রায় সব দোকানদারীরা ৩- ৪ ফুট জায়গা ছেড়ে দিয়েছে, তারা বলেন আমরা ছেড়ে দিতে পারলে তারা কেন পারবে না। সবার তো মালিকানা রয়েছে। দশের স্বার্থে এরা কেন ছেড়ে দিবেনা।
অন্যদিকে জানা গেছে, সেখানে কয়েকজন দোকানদার নিজের নামে জায়গায় দলিল উপজেলা প্রশাসনের কাছে প্রদর্শন করেছে বলে জানা গেছে। সে জন্য ছেড়ে দিতে রাজী নয়। তবে অনেকে বলছেন এদিকে দোকানের প্লটগুলো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাউন্ডারির সাথে ঘেঁষে হওয়ায় অনেকে এগুলো হাসপাতালে জায়গায় বলে দাবি করছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পল্টন ঘাট এবং বাজারে উপর দুইদিক হতে রাস্তা (আইসিসি ঢালাই) শুরু করে আনুমানিক প্রায় ৩০ মিটারের মত রাস্তার কাজ জায়গায় না থাকায় আইসিসি ঢালাইয়ের কাজ করা যাচ্ছে না। সেখানে দেখা যায় রাস্তার উত্তর পাশে রিটেইনিং ওয়াল দিয়ে রাস্তাটি সংযুক্ত করা হলেও দক্ষিণ পাশে জায়গা না থাকায় ঐটুকু রাস্তার কাজ বাকি আছে।সেখানে মোট ১০ টির মত দোকানের প্লট রয়েছে। সেই দোকানগুলো না উঠার কারণে রাস্তার কাজ করা যাচ্ছে না।
স্থানীয়দের ভাষ্য মতে, দীর্ঘদিন ধরে প্রকল্পের নির্ধারিত অনুযায়ী জায়গা না থাকায় কাজ করতে পারছে না বাস্তবায়নকারী সংস্থাটি।
এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে পল্টন ঘাট হতে কিছু অংশ এবং থানা হতে বাজারে নীচ পর্যন্ত যেটুকু রাস্তা কাজ (আরসিসি) হয়েছে। জায়গার মালিকরা পর্যাপ্ত জায়গা ছেড়ে না দেওয়ায় তা প্রকল্পের নির্ধারিত মাপ অনুযায়ী করা হয় নি বলে অভিযোগ উঠেছে। তাই রাস্তাটি ছোট হওয়ার কারণে ভবিষ্যতে হাসপাতালে এম্বুলেন্স এবং আগুন লাগলে ফায়ার বিগ্রেটের গাড়ি,তাছাড়া পল্টন ঘাটে খাদ্য গুদাম থাকায় ট্রাকে করে খাদ্য শস্য পরিবহনের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে চলাচলের বড় ধরনের অসুবিধা হতে পারে বলেও জনমনে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এই প্রকল্পের কনসালটেন্ট আজিজ গণমাধ্যমকে জানান,পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় আমরা ঐটুকু রাস্তার কাজ করতে পারিনি। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী আছেন। তারা আমাদেরকে যতটুকু জায়গা দিবে আমরা ততটুকু কাজ করতে পারব।
এবিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী আলতাফ হোসেন গণমাধ্যমকে জানান,বাজারে রাস্তার কিছু অংশের কাজ বাধার কারণে বন্ধ আছে ব’লে স্বীকার করেন। তিনি আরো জানান, উপজেলা প্রশাসনে কাছ থেকে পর পর নোটিশ প্রদান করলেও এখনো তারা সেচ্ছায় জায়গায় ছাড়ছেনা।অনেক দোকানদার নাকি কর্তৃপক্ষের কাছে জায়গার দলিল প্রদর্শন করেছে। এই বিষয়ে প্রশাসন কাজ করছে। প্রশাসন যদি জায়গা করে দিতে না পারে যতটুকু জায়গা আছে ততটুকুই রাস্তার কাজ করব।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জামশেদ আলম রানা গণমাধ্যমকে জানান,কয়েকজন দোকানদার তাদের নামে জায়গার দলিল রয়েছে বলে দাবি করছে।তাই এই বিষয়ে ডিসি অফিস থেকে সার্ভেয়ার এসে কাগজপত্র যাচাই করে যতটুকু ব্যক্তি মালিকানা আছে জায়গা মেপে দেখে তারপর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আশা করি সপ্তাহের মধ্যে কাজ হয়ে যাবে বলে জানান। রাস্তাটি কাজ নির্ধারিত মাপে হলে ভালো হয়।এতে করে সবাই সুবিধা ভোগ করতে পারবে।