জিয়াউল ইসলাম জিয়া, বিশেষ প্রতিনিধি: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ১১:৩২:০৮
সাতক্ষীরা যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালতে কারাবিভাগের মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়র জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেনের বিরুদ্ধে ৫ কোটি টাকার মানহানি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ১০ সেপ্টেম্বর আদালতে মামলাটি দায়ের করেন অবসরপ্রাপ্ত কারা মহা পুলিশ পরিদর্শক (প্রিজন্স) শেখ আব্দুল অমিক। আদালতের বিচারক শহিদুল ইসলাম বিবাদীপক্ষকে সমন জারির নির্দেশ দিয়েছেন। এ মামলার পরবর্তী দিন ধার্য রয়েছে আগামী ৭ অক্টোবর। শেখ আব্দুল অমিক সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁকাল গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার বিবরণে জানা যায়, বাদী শেখ আব্দুল অমিক দীর্ঘ ২৩ বছর দেশের বিভিন্ন কারাগারে সুনামের সঙ্গে রাস্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ২০১১ সালের ২৯ এপ্রিল অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। অবসরের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কারা অধিদপ্তরের অনিয়ম নিয়ে তিনি মাঝে মাঝে মন্তব্য করতেন। তবে তিনি সর্বদা কারা অধিদপ্তরের সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখতে সচেষ্ট ছিলেন।
বাদীর অভিযোগ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মন্তব্য করার অভিযোগে গত ২৯ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে কারা মহাপরিদর্শক সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন স্মারক নং ৫৮,০৪,০০০০,০২৮,০৫,০০১,২৫-২৭৯ অনুযায়ী তাকে দেশের সকল কারাগারে অবাঞ্ছিত (Persona non-grata) ঘোষণা করেন। এ সংক্রান্ত চিঠির কপি ইতোমধ্যে সকল কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এতে বাদী সামাজিকভাবে হেয় হয়েছেন । তার সম্মানও ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে ।
মামলায় আরজি পেশ করা হয়, অবসরপ্রাপ্ত একজন জ্যেষ্ঠ কারা কর্মকর্তা হিসেবে বাদীকে দেশের সব কারাগারে প্রবেশে নিষিদ্ধ করা অন্যায় ও বেআইনি। এ ঘটনায় গত ১৮ মে ২০২৫ তারিখে মহাপরিদর্শককে প্রতিবাদপত্র দেওয়া হয়। পরবর্তীতে আইনজীবীর মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। প্রতিবাদপত্র ও লিগ্যাল নোটিশ দেওয়ার পরও বিবাদীপক্ষ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। এ কারণে তিনি সাতক্ষীরা যুগ্ন জেলা জজ আদালতে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেছেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জিএম আবুবকর সিদ্দিক আদালতে বলেন, “আমার মক্কেলকে বেআইনিভাবে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে অপমানিত করা হয়েছে। এজন্য মানহানির ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত ১৪ আগস্ট আদালতে মামলা দায়ের করেন তার মক্কেল।কিন্তু আদালত নির্দিষ্ট পরিমাণ কোর্ট ফি দিয়ে মামলা করার আদেশ দেন। গত ১০ সেপ্টেম্বর বাদীপক্ষ সেই নির্দিষ্ট পরিমাণ কোর্ট ফি দাখিল করার পর আদালত বিবাদীপক্ষকে সমন ইস্যু করার নির্দেশ দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের জিপি (সরকারি কৌশলী) অসীম কুমার মন্ডল বলেন, বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। মহাপরিদর্শকের পক্ষ হতে কেন এ ধরনের আদেশ দেওয়া হয়েছিল, আদালতে তিনি তার যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করবেন।