দেশজুড়ে

সাতক্ষীরার দেবহাটায় অনৈতিক কাজে লিপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক ও আয়া আটক

  জিয়াউল ইসলাম জিয়া, বিশেষ প্রতিনিধি: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ১০:১৪:৪৩

সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলায় অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার অভিযোগে এক সহকারী প্রধান শিক্ষক ও এক আয়াকে আটক করে জনতা। পরে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে পুলিশ আটককৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

আটককৃতরা হলেন দেবহাটা উপজেলার টাউনশ্রীপুর শরচ্চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক সঞ্জীব কুমার ব্যানার্জী এবং একই বিদ্যালয়ের আয়া জান্নাতুল ফেরদৌস।

স্থানীয় সূত্র জানায়, তারা দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। এর ফলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছিল এবং প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছিল। এ বিষয়টি পূর্বেও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির নজরে আসে। তখন তাদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু তারা সেই সতর্কতা উপেক্ষা করে সম্পর্ক বজায় রাখেন।

অভিযোগ রয়েছে, তাদের অনৈতিক সম্পর্কের কারণে জান্নাতুল ফেরদৌসের পারিবারিক জীবনে অশান্তি সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে তিনি দেবহাটা উপজেলার কুলিয়া আশু মার্কেটে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় লোকজন ওই ভাড়া বাসায় সহকারী প্রধান শিক্ষক সঞ্জীব কুমারকে আয়াসহ আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় উত্তেজিত জনতা তাদের আটক করে পুলিশে খবর দেন। পরে দেবহাটা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুজনকে থানায় নিয়ে আসে।

দেবহাটা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং টাউনশ্রীপুর শরচ্চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল মতিন বকুল জানান, অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। বিদ্যালয়ের পরিবেশ অশান্ত করার দায়ে অভিযুক্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক ও আয়াকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

তিন সদস্য বিশিষ্ট ওই তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান মাসুমকে। অপর দুই সদস্য হলেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক আমিরুল ইসলাম ও শিক্ষক হাসান রেজা মুকুল। এ কমিটি তদন্ত শেষে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিলে তাদের বিষয়ে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ম্যানেজিং কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম কিবরিয়া বলেন, রাত সাড়ে ১১ টার দিকে স্থানীয়রা খবর দিলে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। তখন অভিযুক্ত শিক্ষক ও আয়াকে স্থানীয়রা আটকে রেখেছিল। পরে আমরা তাদের থানায় নিয়ে আসি। শুক্রবার সকালে আইনগত প্রক্রিয়া শেষে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে তাদের জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো জেলায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীর অনৈতিক কর্মকাণ্ডে স্থানীয় অভিভাবক ও সাধারণ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ রক্ষা ও প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা অটুট রাখতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

আরও খবর