কৃষি ও প্রকৃতি

লালমনিরহাটে শাক সবজি চাষে ব্যস্ত কৃষকেরা

  মোস্তাফিজুর রহমান, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ৯:২৯:০৮

লালমনিরহাটে সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকেরা। বিভিন্ন জাতের সবজির চারা রোপণ ও পরিচর্যায় কৃষকদের ব্যস্ততা বেড়েছে। বাজারের চাহিদা বিবেচনায় রেখে একটু বেশি লাভের আশায় সবজিতে স্বপ্ন বুনছেন তারা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, লালমনিরহাট জেলার ৫টি উপজেলাসহ তিস্তা, ধরলা, রত্নাই, স্বর্ণামতি, শিংগীমারী, সানিয়াজান, ত্রিমোহনী, সাকোয়া, মরাসতি, ধোলাই, গিদারী, ছিনাকাটা নদীগুলোর প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের জমিগুলোতে দিন দিন বেড়েই চলেছে সবজি চাষ। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে সারি সারি ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, টমেটো, বেগুন, সিম, মুলা, করলা, পটল, পালং শাক ও লাল শাকসহ রকমারি নানান সবজির আবাদ। মাঠে মাঠে এসব ফসল পরিচর্যায় এখন ব্যস্ত কৃষকেরা। কিছুদিনের মধ্যেই ‌এসব সবজি বাজারজাত শুরু করবেন এমনই প্রত্যাশা করছেন এখানকার কৃষকেরা।

বর্তমান সময়ে এখানকার কৃষকেরা কাকডাকা ভোরে ঘুম থেকে উঠে জমিতে হালচাষ, চারা রোপণ, ক্ষেতে পানি দেওয়া ও আগাছা পরিস্কার করাসহ নানা কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। শুধু নিজেদের চাহিদাই নয়, বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে এসব সবজি। এই মৌসুমে জেলার বিভিন্ন বাজারসহ পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে সবজি পাঠাবেন কৃষকেরা। এই প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে লালমনিরহাটের কৃষকেরা।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা নদীর প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যে কোনো আগাম সবজি চাষ হলে বাজারে চাহিদা বেশি থাকে। আর মুনাফাও অনেক বেশি হয়। তাই কৃষকেরা বিশেষ করে উঁচু জমিতে সবজি চাষে ঝুঁকছেন। অল্প সময়ে কম খরচে অধিক মুনাফা লাভের জন্য ফুলকপি, মিষ্টি কুমড়া, লাউ ও বাঁধাকপির জুড়ি নেই। পানি জমে না এমন উঁচু জমিতে কপি চাষের জন্য উপযুক্ত।

তিস্তা নদীর প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে বর্তমানে বাণিজ্যিক ভাবে আগাম সবজি চাষে বেশ আলোড়ন তুলছেন কৃষকেরা।

স্থানীয় কৃষকেরা বলেন, বর্তমানে সবজিতে কীটনাশকের ব্যবহার অনেকটাই কম থাকায় গুণগত মানে চাহিদাও অনেক বেশি। চলমান বাজার ও আবহাওয়া ভালো থাকলে জমি থেকে সবজি চাষ করে আয় হবে বলে আশা রাখছি।

মোগলহাট ইউনিয়নের কৃষক মোঃ নুরজামাল, কমল কান্তি বর্মন বলেন, সবজি চাষে তুলনামূলকভাবে মূলধনও কম লাগে। পরিশ্রমও তেমন বেশি না। কম সময়েই সবজি বিক্রির উপযোগী হয়ে ওঠে। তবে সেবায় ত্রুটি করা যাবে না। এছাড়া চলতি মৌসুমে সবজির দামও বেশ ভালোই আর পরিবারের চাহিদাও মেটানো সম্ভব। সব মিলিয়ে সবজি চাষকেই আমরা লাভজনক মনে করছি।

লালমনিরহাট সদর উপজেলা কৃষি অফিসার খন্দকার সোহায়েল আহমেদ জানান, এবার শাক-সবজিসহ প্রায় সব রকমের ফসলের ভালোই ফলন হচ্ছে। আশা করি এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি শাকসবজি উৎপাদন হবে এই অঞ্চলে।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মোঃ সাইখুল আরিফিন জানান, চলতি মৌসুমে বিভিন্ন জাতের সবজির চাষবাদ হয়েছে। সেই সাথে আগাম শাক সবজিতে বর্তমানে কৃষকেরা জৈব পদ্ধতিতে বিষমুক্ত শাক সবজি উৎপাদন করতে সক্ষম হচ্ছে। অন্যদিকে বাজারে সবজির চাহিদা থাকায় কৃষকেরা নায্য দামে বিক্রি করতে পেরে লাভবান হচ্ছে।

আরও খবর