নড়াইল সদর হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডাক্তার মো: আব্দুল গফফারের বিরুদ্ধে সীমাহীন দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর এ হাসপাতালে তত্ত্ববধায়ক হিসেবে যোগদানের পর স্থানীয় আওয়ামীলীগের এক নেতার উপর ভর করে অপ্রতিরোধ্য গতিতে একের পর এক দূর্নীতি করে আসছেন।স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্ধর্তন কর্মকর্তা, সদর হাসপাতালে কর্মরত অধ:স্তন ডাক্তার,নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারী, প্রশাসনের কর্মকর্তা, স্থানীয় সূধী সমাজ,সাংবাদিক সবই ছিল তাঁর কাছে গুরুত্বহীন। নিজের সিদ্ধান্তকে বাস্তবায়নে দায়িত্ববোধের বাইরে কাজ করতে থেমে থাকেননি তিনি। কর্মক্ষেত্রে ন্যায়-অন্যায় বিবেচনা না করে নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য অর্থ লিপাসু তত্ত্ববধায়ক তাঁর উপর অর্পিত দায়িত্ব উপেক্ষা করে হাসপাতালের নিচে অবস্থিত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আরএইচস্টেপে আল্ট্রাসনোগ্রাম কাজে নিজেকে অধিকাংশ সময় নিয়োজিত রাখেন। আলট্রাসনোগ্রামে তেমন অভিজ্ঞতা না থাকলেও অর্থের লোভে দাপ্তরিক কাজ ফাঁকি দিয়ে নিয়মবর্হিভূত ভাবে ওই কাজ করে সংস্থা থেকে নিয়মিত কমিশন গ্রহণ করে থাকেন। বিষয়টি নিয়ে রোগী, হাসপাতালের ডাক্তার, নার্সসহ অন্যান্য ষ্টাফদের মধ্যে ঘৃনা ও ক্ষোভ বিরাজ করলেও চাকরি হারানো কিংবা শাস্তির ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না। এছাড়া হাসপাতালে সিজার কিংবা অন্য কোন সার্জারী সংক্রান্ত রোগীর কাছ থেকে তত্ত্বধায়কের নির্দেশে ৫শ’ থেকে ১হাজার টাকা অবৈধভাবে নেয়া হয়ে থাকে।গরীবের শেষ ভরসা সরকারি হাসপাতালে গিয়ে অসহায় মানুষকে অপারেশন থিয়েটারের জন্য টাকা দিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়তে শোনা গেছে।হাসপাতালে আউটসোর্সিং এ নিয়োগে তত্ত্ববধায়ক বড় ধরনের দূর্নীতি ও অনিয়ম করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ পদে নিয়োগ লাভের জন্য ঘুষের প্রতিযোগিতায় যিনি এগিয়ে ছিলেন তিনিই শেষমেষ নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন।তিনি (তত্ত্ববধায়ক) দায়িত্বভার গ্রহণের পর নতুন করে এ পদে নিয়োগ দেয়ার কারণে অনেককে চাকুরি হারাতে হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের জন্য নিম্নমানের খাবার সরবরাহে নিয়মিত আলোচনা-সমালোচনা চলে রোগী ও স্বজনদের মাঝে।কিন্তু কে কার কথা শোনে।কেউ প্রতিবাদ করতে গেলে তত্ত্ববধায়েকের পোষ্য লোকজন সাইজ করে থাকেন প্রতিবাদকারীদের। হাসপাতালে বিভিন্ন রোগীদের পরীক্ষা করা সিবিসি, হরমোন,ইলেকট্রোলাইটসহ বিভিন্ন টেষ্ট থেকে কমিশন নিয়ে থাকেন তিনি। হাসপাতালের ওষুধ সরবরাহ, খাদ্য, সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতি, কেমিক্যাল, এসি মেশিন, আসবাবপত্রসহ টেন্ডারের মাধ্যমে ক্রয় করা বিভিন্ন মালামালে পছন্দের সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা তত্ত্ববধায়ক গ্রহণ করে থাকেন।এ কারণে ঠিকাদার খারাপ ও নিম্ন মানের মালামাল সরবরাহ করায় শুরুতে তা বিকল কিংবা নষ্ট হয়ে গেছে। হাসপাতালের এসব অনিয়ম ও সীমাহীন দূর্নীতি নিয়ে কর্মরত ডাক্তার, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করলেও বদলী কিংবা শাস্তির ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না।দূর্নীতিবাজ তত্ত্ববধায়কের মাথার উপর ছাতা হিসেবে আওয়ামীলীগের ওই বড় নেতা থাকায় ভয়ে টু শব্দটি কেউ করতে পারতেন না।
বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতির বিষয়গুলো অস্বীকার করে তত্ত্ববধায়ক ডাক্তার মো: আব্দুল গফফার বলেন, ‘আমি কোনো অনিয়ম কিংবা দূর্নীতি করিনি। নিয়ম মেনেই হাসপাতালের সব ধরনের কর্মকান্ড পরিচালিত হয়ে থাকে।কেউ কেউ সুবিধা না পেয়ে আমার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালাতে পারে।