দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুসের জামালপুর পৌর শহরের সাহাপুর মৌজার ১৪.২৫ শতাংশ জমি উদ্ধার হয়েছে।
বুধবার সকালে জামালপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গাজি আশিক তার প্রশাসনের জনবল নিয়োগ করে এ জমি উদ্ধার করেন।
এ সময় জামালপুর সদর থানার ওসি মহব্বত কবীর, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার সুজায়েত আলী ফকিরসহ গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। উদ্ধার কর্মীরা বেদখল হওয়া চারতলার একটি ভবন ও তিন তলার একটি ভবন বুলড্রেজার মেশিন দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হয়।
জানাগেছে, বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কদ্দুস ১৯৭৯ সালে মৃত ঊজির আলী সরদারের স্ত্রী হালিমা খাতুন এর কাছ থেকে জামালপুর পৌর এলাকার সাহাপুর মৌজার দক্ষিণ মুকন্দবাড়ী এলাকায় ১৪.২৫ শতাংশ ভূমি বায়না দলিল মূলে ক্রয় করেন। পরে মৃত উজির আলীর সন্তানাদি নাবালক থাকায় তার স্ত্রী অভিভাবক হয়ে আদালতে আবেদন করলে তা মঞ্জুর হয়। পরে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কুদ্দুস ভূমির মালিক কে জমিটি সাব- কবলা দলিল করে দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন । ভূমির মালিক নানা তাল বাহানা করতে থাকলে এবং একই জমি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুস ৫৭/১৯৮৫ নং চুক্তি প্রবলের মামলা দায়ের করেন। ইতোমধ্যে জনৈক মাহাবুবুল ভূমির মালিক এর সাথে যোগসাজশে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কদ্দুছ এর বায়না দলিল এর পূর্বের তারিখ দেখিয়ে একটি জাল বায়না দলিল তৈরি করেন যা পরবর্তীতে আদালতে প্রমাণিত হয। পরে ৫/১০/১৯৯২ ইং তারিখে বিজ্ঞ সাব জজ আদালতে মামলার বাদী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কুদ্দুস এর পক্ষে রায় প্রদান করেন, সেই সাথে পণ মূল্যের বিক্রি টাকা জমা প্রদানের নির্দেশসহ বায়না সংশ্লিষ্ট তফসিল ভূমি আদালতের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করে দেয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়। পরে বিগত ২৯/০৯/১৯৯৯ তারিখে বিজ্ঞ আপীল আদালতে জেলা জজ কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে মাহাবুবুল হক গং মহামান্য হাইকোর্ট ডিভিশনে ১০৬৩/২০০০ ও ১০৬৪/২০০০ নং সিভিল রিভিশন দায়ের করেন এবং ২৪/০৩/২০১১ তারিখে মাহাবুবুল হকে গং দের পক্ষে রায় প্রদান করেন । মহামান্য হাইকোর্ট ডিভিশনের রায়ের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা আবুল কুদ্দুস মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট ডিভিশনের আপীলেট ডিভিশনে লিভ টু আপিল এবং স্থীতি অবস্থা স্টেটাস কিউও এর আবেদন করলে বিজ্ঞ সুপ্রিম কোর্ট আবেদন গ্রহণ করে সকল পক্ষকে স্থিতি অবস্থা বিরাজ করার নির্দেশ প্রদান করেন ।
পরে হাইকোর্ট এর রায়ের সুবাদে মাহাবুবুল হক স্থানীয় কিছু ব্যাক্তির কাছে চতুরতার সাথে নালিশী ভূমি বিক্রয় করে স্বপরিবারে রাতের আঁধারে জামালপুর ত্যাগ করেন । এবং রাতারাতি নালিশী ভূমি মাটি ভরাট করে বহুতল ভবন নির্মাণ কররেন তারা।