সুন্দরবনের অভয়ারণ্য এলাকায় কোনো প্রকার জেলে প্রবেশ করতে পারবে না বলে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে বনবিভাগ। এ নিয়ে বন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং বন্যপ্রাণীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকার ঘোষিত অভয়ারণ্য এলাকায় প্রবেশ, মাছ ধরা কিংবা কাঁকড়া আহরণ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ।
বনবিভাগের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে অভয়ারণ্য এলাকায় কিছু অসাধু ব্যক্তি গোপনে ঢুকে মাছ ও কাঁকড়া শিকার করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এতে জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হচ্ছে এবং প্রকৃতির স্বাভাবিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। এসব অবৈধ প্রবেশ রোধে বনবিভাগের বিশেষ টহল জোরদার করা হয়েছে।
স্থানীয় বন কর্মকর্তারা জানান, অভয়ারণ্য এলাকায় অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া বিধান থাকলেও সে আইন অমান্য করে অভয়ারণ্য এলাকায় ঢুকে পড়েন। তবে কোনো জেলে ধরা পড়লে তাদের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা দায়ের করে আদালতে পাঠানো হয়। একইসঙ্গে এ ধরনের কাজে সম্পৃক্ত নৌকা, জাল ও সরঞ্জাম জব্দ করা হবে।
বনবিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তা বলেন, “অভয়ারণ্য হচ্ছে বন্যপ্রাণী ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের বিশেষ জায়গা। সেখানে প্রবেশ করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। জেলেদের অনুরোধ করছি, জীবিকার জন্য অন্যত্র মাছ ধরুন, কিন্তু অভয়ারণ্য এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করবেন না।”
অন্যদিকে, স্থানীয় জেলেরা জানান, সুন্দরবনে অভয়ারণ্য এলাকায় শিকার করতে না পারলেও তারা বিকল্প এলাকায় মাছ ও কাঁকড়া ধরেই জীবিকা নির্বাহ করছেন। তবে কিছু অসাধু ব্যক্তি প্রলোভনে পড়ে নিষিদ্ধ এলাকায় প্রবেশ করে, যা পুরো জেলে সম্প্রদায়কে ঝুঁকিতে ফেলে।
পরিবেশবিদরা বলছেন, সুন্দরবনের অভয়ারণ্য এলাকাগুলো রক্ষিত থাকলে শুধু বন নয়, উপকূলীয় মানুষের জীবন-জীবিকাও টিকে থাকবে। তাই বনবিভাগের এই উদ্যোগকে তারা স্বাগত জানিয়েছেন এবং স্থানীয়দেরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
সব মিলিয়ে সুন্দরবনের অভয়ারণ্যে জেলেদের প্রবেশে কড়া নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বনবিভাগ জানিয়েছে, প্রকৃতির এই অমূল্য সম্পদ রক্ষায় কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬ জেলে আটক ও দশটি নৌকা উদ্ধার করেছে স্মার্ট পেট্রোল টিমের সদস্যরা। আটককৃত জেলেদের বন আইনে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।