সারাদেশ

সাতক্ষীরা ন্যাশনাল হাসপাতালের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ

  জিয়াউল ইসলাম জিয়া, বিশেষ প্রতিনিধিঃ ৩০ অক্টোবর ২০২৫ , ১০:২৯:১৫

চিকিৎসা সেবায় নিম্ন মান নিয়ে সারাবছরই সমালোচনায় থাকে সাতক্ষীরা ন্যাশনাল হাসপাতাল। ইতিপূর্বে চিকিৎসা সেবায় অবহেলার কারণে রোগীর মৃত্যুসহ, রোগ নির্ণয়ে ভুল রিপোর্ট প্রদান, রোগীর স্বজনদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ, বিভিন্ন অজুহাতে আজগুবি সেবার বিল ভাউচার দিয়ে রোগীর স্বজনদের থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ নানাবিধ অভিযোগ আছে।

সম্প্রতি আরিফুল ইসলাম নামের একজন ফেসবুক ব্যবহারকারীর একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে সাতক্ষীরা শহরের ইটাগাছা এলাকায় অবস্থিত সাতক্ষীরা ন্যাশনাল হাসপাতাল নিয়ে আবারও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। আরিফুল ইসলাম নামের ওই ব্যক্তি পোস্ট করেছেন, সাতক্ষীরা ন্যাশনাল হাসপাতালে চলছে রোগী নিয়ে রমরমা ব্যবসা। পরিচালক গাজী হাফিজ সাধারণ মানুষের জীবনকে পুঁজি করে গলা টিপে মারছে অসহায় রোগীর স্বজনদের। আর এই ফেসবুক পোস্টে বিভিন্ন ভুক্তভোগীরা বিভিন্নভাবে মন্তব্য করেছেন।

ওই পোস্টে এসকে রেজাউল ইসলাম বাবলু লিখেছেন, এর আগেও রোগী মেরে ফেলে দিয়েছিল। ওই ন্যাশনাল হাসপাতাল বন্ধ করে দেয়া হোক। প্রতারণার হাত থেকে মানুষ রেহাই পাক। এনজেড মাসুম বস লিখেছেন, শুধু এখানে নয়, অধিকাংশ চিকিৎসালয়ে একই অবস্থা। মানুষের উপকারের চেয়ে ক্ষতি করে বেশি। দি ফিজ লাইভ নামে আইডি থেকে লিখেছেন, হাফিজ ভাই সাংবাদিক আবার ওখানকার ম্যানেজার, কিছু করতে গেলেই সাইদ ভাইকে দিয়ে ফোন করায়। আমজাদ হোসেন সাদ্দাম নামের আইডি থেকে লেখা হয়েছে, এটা অনেক আগে থেকে হচ্ছে, কিন্তু টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করে রাখে। সাব্বির আহম্মেদ রাব্বি নামের আইডি থেকে লিখেছেন শোনেন ভাই বাংলাদেশে লাখ লাখ হাসপাতাল আছে যেখানে প্রতিদিন অনেক রোগী মারা যাচ্ছে। তার মানে এই না যে আপনি পুরো দোষটা হাসপাতাল এর উপর চাপাই দিবেন। রোগীর মধ্যেও তো কোন সমস্যা থাকতে পারে তাই না। এখন রোগী মারা গেছে বলেই পুরো দোষটা হাসপাতালের তাইতো। প্রতিদিন সরকারি হাসপাতালে হাজার হাজার রোগী মারা যাচ্ছে কিন্তু সেখানে কোন নিউজ করার মত সাংবাদিক খুঁজে পাওয়া যায় না, কারণ সরকারি বলে জবাবদিহিতার কোন প্রশ্ন উঠে না। আর আপনি বললেন সাধারণ মানুষের জীবনকে পুঁজি করে গলা টিপে মারছে তো সেটার প্রমাণ আপনি আগে দেন। কারণ প্রমাণ ছাড়া কথা বলাটা অযৌক্তিক।

ফেসবুকে পোস্টদাতা আরিফুল ইসলাম নামের আইডির ওই ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, হাসপাতালটি আমার বাড়ির পাশেই। আমার স্ত্রী অসুস্থ ছিল। ন্যাশনাল হাসপাতালে ডাক্তার দেখাব বলে সকাল ৯টায় সেখানে যাই। গিয়ে সিরিয়াল দিলে তারা জানায় আধাঘন্টার মধ্যে ডাক্তার আসবে, একটু অপেক্ষা করুন।’ তিনি আরো জানান, আমার অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে ডাক্তারের জন্য অপেক্ষা করতে থাকি। হাসপাতালের কর্মীদের কাছে ডাক্তার আসার খবর জানতে চাইলে তারা কোন কথা কর্ণপাত না করে মোবাইলে অনলাইন জুয়া খেলায় মনোযোগী ছিল। অবশেষে অপেক্ষা করতে করতে দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামে। কিন্তু সেই ডাক্তার আসেনি। বিকেল পাঁচটার দিকে ডাক্তার দেখানোর ফি’র টাকা ফেরত নিয়ে চলে আসি।’

এসব অভিযোগের ব্যাপারে সাতক্ষীরা ন্যাশনাল হাসপাতালের পরিচালক গাজী হাফিজ জানান, সরকারি অফিস টাইমে সরকারি ডাক্তার থাকেন না। এজন্য ডাক্তার দেখাতে বিলম্ব হয়েছে।

তিনি আরো জানান, হাসপাতালের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সঠিক নয়।

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন আব্দুস সালাম বলেন, এমন কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাতক্ষীরা ন্যাশনাল হাসপাতালের লাইসেন্স এর ব্যাপারে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন জানান, লাইসেন্স আছে তবে নবায়ন করেনি। লাইসেন্স নবায়ন না করে কীভাবে হাসপাতাল চলছে জানতে চাইলে তিনি জানান, জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলতে।

আরও খবর