জিয়াউল ইসলাম জিয়া, বিশেষ প্রতিনিধিঃ ১৯ অক্টোবর ২০২৫ , ৪:০৯:০৪
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম প্রধান স্থলবন্দর ভোমরা এখন আনুষ্ঠানিকভাবে ‘কাস্টমস হাউজ’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের স্মারক নং ০৮.০০.০০০০.০২৭.২৮.০৪৩.১৯.৯৭, তারিখ ১৪ অক্টোবর ২০২৫ খ্রি.-এর মাধ্যমে এই সরকারি অনুমোদন জারি করা হয়েছে।
এর মধ্য দিয়ে সাতক্ষীরা জেলার ভোমরা স্থলবন্দর বাংলাদেশের কাস্টমস প্রশাসনিক কাঠামোয় নতুন মর্যাদা অর্জন করল। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত দেশের দক্ষিণ- পশ্চিমাঞ্চলের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে নতুন গতি সঞ্চার করবে এবং আঞ্চলিক অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন আনবে।
ভোমরা কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন সরকারের এই পদক্ষেপকে ‘একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
ভোমরা সিএন্ডএফের সভাপতি মো. আবু হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মো. আবু মুছা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক ভোমরাকে কাস্টমস হাউজ ঘোষণার মাধ্যমে এই অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্ভাবনা বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। আমরা সরকারের এই দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্তকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই।
তারা আরও বলেন, ভোমরা এখন দেশের অন্যতম ব্যস্ততম স্থলবন্দর। প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য পরিচালিত হয় এই বন্দরের মাধ্যমে। কাস্টমস হাউজে উন্নীত হওয়ার ফলে প্রশাসনিক সক্ষমতা, জনবল বৃদ্ধি ও অবকাঠামো উন্নয়ন হবে- যা ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিল।
ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশন সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), কাস্টমস বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। তারা আশা প্রকাশ করেছে, সরকারের এই উদ্যোগের ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে ভোমরা কাস্টমস হাউজ অচিরেই দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্রে পরিণত হবে এবং জাতীয় রাজস্ব আয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বর্তমানে ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে খাদ্যপণ্য, নির্মাণসামগ্রী, পোশাক ও কসমেটিকসসহ নানান পণ্য আমদানি হয়। অপরদিকে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হয় কৃষিপণ্য, মাছ ও শিল্পজাত দ্রব্য।
‘কাস্টমস হাউজ’ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার ফলে এখন থেকে এখানে পূর্ণাঙ্গ রাজস্ব প্রশাসন, শুল্ক নির্ধারণ, আমদানি-রপ্তানি নথি যাচাই ও বাণিজ্য ব্যবস্থাপনার সব কার্যক্রম স্থানীয়ভাবে সম্পন্ন করা যাবে। এতে সময়, খরচ ও প্রশাসনিক জটিলতা কমবে, যা ব্যবসায়ীদের জন্য বড় স্বস্তির বিষয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী, কর্মকর্তা ও সাধারণ জনগণ সরকারের এ সিদ্ধান্তে গভীর সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
তাদের বিশ্বাস- এই ঘোষণা শুধু ভোমরা বন্দর নয়, গোটা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনৈতিক চিত্র পাল্টে দেবে।