টপ টেন

সাতক্ষীরায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় মতবিনিময় সভা

  জিয়াউল ইসলাম জিয়া, বিশেষ প্রতিনিধি: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ১২:২৭:৩৭

“ধর্ম শান্তির বার্তা দেয়—বিদ্বেষের নয়।” এই মূলমন্ত্রকে সামনে রেখে সাতক্ষীরায় অনুষ্ঠিত হলো “সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সুরক্ষায় আলেম-ওলামার ভূমিকা” শীর্ষক এক বিশেষ আলোচনা সভা।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে এ সভার আয়োজন করে ইসলামিক ফাউন্ডেশন, সাতক্ষীরা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মোঃ মেহেদী হাসান।

পুলিশ সুপার তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র। এখানে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই মিলেমিশে বসবাস করেন। এই সম্প্রীতি নষ্ট করার অপচেষ্টা বরদাশত করা হবে না। আলেম-ওলামারা সমাজের আলোকবর্তিকা। তাঁরা যদি সমাজকে সঠিক পথে পরিচালিত করেন, তবে গুজব কিংবা উসকানি কেউ ছড়াতে পারবে না।

তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া খবর, ধর্মীয় উসকানি ও গুজব মোকাবিলায় সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। পাশাপাশি মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ডাকাতি ও ছিনতাই দমনে সম্মিলিতভাবে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

আলোচনা সভায় উপস্থিত আলেম-ওলামারা বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কেবল রাষ্ট্রীয় নীতি নয়, এটি ইসলামের মূল শিক্ষা। ইসলাম সব সময় মানবিকতা, সহনশীলতা ও শান্তির কথা বলে। তারা মনে করেন, মসজিদ-মাদরাসা থেকে শুরু করে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সম্প্রীতির বাণী প্রচার করা হলে সমাজে উগ্রবাদ ও বিভেদ ঠেকানো সহজ হবে।

বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি একটি ঐতিহ্য। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অংশ নিয়েছিল। কিন্তু বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া খবর, উসকানিমূলক বক্তব্য ও ধর্মীয় বিভাজন সৃষ্টির অপচেষ্টা মাঝে মাঝেই দেখা যায়। এমন পরিস্থিতিতে সাতক্ষীরার এই আলোচনা সভা বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।

সভায় জেলা তথ্য অফিসার মোঃ জাহারুল ইসলাম, জেলার বিশিষ্ট আলেম-ওলামা, বিভিন্ন মসজিদের ইমাম, শিক্ষক ও ধর্মীয় সংগঠনের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। অংশগ্রহণকারীরা মত দেন যে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান থেকে একযোগে সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দিলে তরুণ প্রজন্ম বিভ্রান্ত হবে না এবং সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে।

আলোচনা শেষে দোয়া পরিচালনা করা হয় দেশের শান্তি, উন্নয়ন ও সম্প্রীতির জন্য। বক্তারা একমত হন যে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়—এটি সমাজের প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব। বিশেষ করে আলেম-ওলামাদের দিকনির্দেশনা ও ইতিবাচক ভূমিকা সমাজকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারে।

আরও খবর