আইন-আদালত

বন কর্মকর্তার ১৭ বিয়ে: আদালতে মামলা, তদন্তে পিবিআই

  জিয়াউল ইসলাম জিয়া, বিশেষ প্রতিনিধি: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ১১:৩৫:২০

বিদেশে পড়ানো, সরকারি চাকরি, বিমানবালা হিসেবে সুযোগ কিংবা সম্পত্তি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ১৭ জন নারীকে বিয়ে করার অভিযোগে বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. কবির হোসেন পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় তদন্তের ভার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বরিশালের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট হাফিজ আহম্মেদ বাবলু স্বপ্রণোদিত হয়ে মেট্রোপলিটন প্রথম আমলি আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। বিচারক মো. সাদিক আহম্মেদ মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দিয়েছেন।

নালিশি মামলার বাদী অ্যাডভোকেট হাফিজ আহম্মেদ বাবলু বলেছেন, বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. কবির হোসেন পাটোয়ারী চাঁদপুরের মতলব উপজেলার বাসিন্দা। তিনি এর আগে ঢাকা, খুলনা, সিরাজগঞ্জ, বাগেরহাটসহ বিভিন্ন জেলায় কর্মরত থাকাকালে ১৭টি বিয়ে ও বিয়ের নামে প্রতারণা করেছেন বলে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। আসামি প্রতিটি বিয়ের বিষয়ে মুসলিম ফ্যামিলি আইনের ১৯৬১ এর ৬ ধারার বিধান লংঘন করে অধ্যাদেশ ৬(৫) এর (খ) ধারায় অপরাধ করেছেন। আগের বিয়ের তথ্য গোপন রেখে একে একে ১৭টি বিয়ে করে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও দেশীয় সংস্কৃতি এবং আমাদের সমাজ ব্যাবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করে গুরুতর অপরাধ করেছেন তিনি।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রাজিব মজুমদার জানিয়েছেন, আদালত অ্যাডভোকেট হাফিজ আহম্মেদ বাবুলর দায়ের করা মামালাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ২০ নভেম্বর মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে।

বরিশাল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. কবির হোসেন পাটোয়ারীর বিচারের দাবিতে ভুক্তভোগী পরিবার ও সুশীলসমাজের ব্যানারে বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বরিশাল নগরীর কাশিপুর বন সংরক্ষক কার্যালয়ের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করা হয়। এ সময় ঢাকার বাসিন্দা নাজনিন আক্তার শীলা, নারায়ণগঞ্জের সোনিয়া, খুলনার নাসরিন আক্তার দোলনসহ ১৭ জন নারী তার প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া নারীরা বলেন, সর্বশেষ খুলনার চাকরিজীবী খাদিজা আক্তারকে চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি বিয়ে করেন কবির। বিয়ের দ্বিতীয় দিনেই স্ত্রীর বাবার বাড়ির সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন চাপ প্রয়োগ করেন তিনি।

ভুক্তভোগী খাদিজা আক্তার বলেন, আমাকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বিয়ে করেছে কবির। পরে বাবার বাড়ির সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় সে (কবির) আমাকে নির্যাতন করে কোয়ার্টার থেকে বের করে দিয়েছে।

নাসরিন আক্তার অভিযোগ বলেন, আমাকেও প্রতারণার ফাঁদে ফেলে কবির বিয়ে করেছে। পরে তার বিয়ের নাটক ধরা পড়ার পর আমাকে মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। কবির হোসেন পাটোয়ারী এ পর্যন্ত যেসব এলাকায় চাকরি করেছে, সেসব এলাকাতেই বিয়ে করেছে। প্রত্যেক স্টেশন ত্যাগ করার পর তাদের আর খোঁজ রাখে না।

অভিযুক্ত কবির হোসেন পাটোয়ারীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

আরও খবর