মোঃ সেলিম উদ্দিন খাঁন, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: ২৪ আগস্ট ২০২৫ , ১২:১৬:২০
চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে মাত্র ১৪ বছরের কিশোর রিহান মাহিনকে পিটিয়ে হ ত্যা:র ঘটনায় এলাকায় এখনো তীব্র ক্ষোভ ও শোক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় নিহতের মা খদিজা বেগম বাদী হয়ে শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাতে ফটিকছড়ি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় নাজিম উদ্দিনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এছাড়া মো. নোমান, মো. আজাদ হোসেন, মো. তৈয়ব ও মহিউদ্দীনসহ মোট পাঁচজনের নাম উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি আরও ৫-১০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। ঘটনার পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে এলাকায় উত্তেজনা এখনো বিরাজ করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
গতকাল ময়নাতদন্ত শেষে নিহত মাহিনের মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে নিজ বাড়িতে আনা হলে শোকের মাতমে ভেঙে পড়ে পুরো গ্রাম। একমাত্র সন্তানের মরদেহ বুকে জড়িয়ে কাঁদতে থাকেন বাবা-মা। রাতেই জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়। শেষবারের মতো মাহিনকে দেখতে ভিড় করেন অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী ও এলাকাবাসী। পুরো এলাকা শোকের ছায়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।
নিহতের পিতা মোহাম্মদ লোকমান আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন আমার ছোট্ট নিষ্পাপ সন্তানকে আমার চোখের সামনেই এলাকার কয়েকজন যুবক পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমি বারবার তাদের কাছে প্রাণ ভিক্ষা চেয়েছি, কিন্তু তারা সেই ভিক্ষাটুকুও দেয়নি। তারা কি মানুষ? তারা কি জানোয়ারের চেয়েও নিষ্ঠুর নয়? আমি আমার সন্তানকে আর ফিরে পাব না, তবে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।” এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন তুচ্ছ কারণে প্রকাশ্যে একজন কিশোরকে হত্যা করা মানবতার জন্য কলঙ্কজনক। আমরা কি মগের মুলুকে বাস করছি? মানুষ আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে, আর নিষ্পাপ প্রাণগুলো এভাবে ঝরে যাচ্ছে! তারা মাহিন হত্যার দ্রুত তদন্ত, আসামিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। অন্যদিকে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। শনিবার (২৩ আগস্ট) আসর নামাজের পর কাঞ্চননগর রুস্তুমিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে শত শত শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে অংশ নেন। এ বিষয়ে ফটিকছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুর আহমেদ বলেন নিহতের মা খদিজা বেগম বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, দ্রুতই অন্য আসামিদেরও ধরা হবে।