নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ৩১ আগস্ট ২০২৫ , ১১:১৪:৩৮
রাজধানীর কাকরাইল এলাকায় জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সংঘর্ষের ঘটনায় গণ অধিকার পরিষদের নেতা এবং সাবেক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর গুরুতর আহত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ডিএমসি) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হামলার কারণ ও ঘটনা:
শুক্রবার বিকেলে গণ অধিকার পরিষদের একটি বিক্ষোভ মিছিল কাকরাইল মোড়ে পৌঁছালে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া–পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাঠিচার্জ করলে নুরসহ অনেকেই আহত হন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিক্ষোভকারীরা জাপা কার্যালয়ের সামনে স্লোগান দিলে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং পরবর্তীতে সংঘর্ষে রূপ নেয়।
নুরের শারীরিক অবস্থা
ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান দৈনিক বাংলাদেশ খবরকে জানান, নুরের মাথায় আঘাত লেগেছে এবং নাকের হাড় ভেঙে গেছে। এছাড়া চোয়ালের হাড়েও ফাটল দেখা দিয়েছে। তাকে আইসিইউতে রেখে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। চিকিৎসকদের মতে, নুরকে এখনও বিপদমুক্ত বলা যাচ্ছে না, অন্তত ৪৮ ঘণ্টা পার না হওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতি স্থিতিশীল হওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া সম্ভব নয়। ইতিমধ্যে তার চিকিৎসার জন্য ৬ সদস্যের একটি বিশেষ মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া:
ঘটনার পরপরই বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এ হামলার নিন্দা জানায়। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “সরকার ভয়ভীতি দেখিয়ে বিরোধী মতকে দমিয়ে রাখতে চাইছে। ভিপি নুরের ওপর হামলা গণতন্ত্রের ওপর হামলার সামিল।”
একইসঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি এবং অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা হাসপাতালে গিয়ে নুরের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন এবং দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের শাস্তির দাবি জানান।
সরকারের প্রতিক্রিয়া:
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস ভিপি নুরের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। তিনি ঢামেক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ফোনে কথা বলে নুরের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ সহায়তার আশ্বাস দেন। প্রধান উপদেষ্টা আরও জানান, “নাগরিক অধিকার চর্চার পথে কোনো ধরনের সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয়। সরকার চিকিৎসার ক্ষেত্রে সব ধরনের সহযোগিতা দেবে।
ভিপি নুরুল হক নুর বর্তমানে হাসপাতালে সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মাথা ও নাকে গুরুতর আঘাত পাওয়ায় তিনি এখনো ঝুঁকিমুক্ত নন। এদিকে হামলার ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বিরোধী দলগুলো একে গণতন্ত্রবিরোধী কর্মকাণ্ড হিসেবে আখ্যা দিয়ে দ্রুত বিচার দাবি করেছে।