নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ১:১৫:৫৯
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) নির্বাচন ২০২৫ সামনে রেখে প্রার্থীদের প্রস্তুতি জোরদার হচ্ছে। ইতোমধ্যেই হলভিত্তিক প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। এই প্রেক্ষাপটে হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হল সংসদে সদস্য (Representatives) পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আরবাব সিদ্দিক মাহিন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে স্বচ্ছ অবস্থান
আরবাব মাহিন কোনো রাজনৈতিক দলের ব্যানারে নয়, ‘স্বতন্ত্র’ হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তার ভাষায় –
“হল সংসদে কোনো প্রকার দলীয় প্রভাব নয়, শিক্ষার্থীদের সমস্যা, অধিকার ও উন্নয়নই হবে আমার অগ্রাধিকার। মুহসীন হলের একনিষ্ঠ আবাসিক শিক্ষার্থী হিসেবে আমি চাই সবার কথা তুলে ধরতে।”
তিনি মনে করেন, হল সংসদের সদস্য পদ ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করার একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ, যেখানে দলীয় চিন্তা নয়, প্রাধান্য পাওয়া উচিত বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা, বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং শিক্ষার্থীদের স্বার্থ।
তিন বছরের অভিজ্ঞতা, ছাত্রজীবনের কাছের ভাবনা
তিন বছরের হলজীবনে হলে বসবাসরত শিক্ষার্থীদের জীবনযাত্রা, খাবারের মান, আবাসন সংকট, স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপত্তা ও পাঠাগার ব্যবস্থার নানা সীমাবদ্ধতা প্রত্যক্ষ করেছেন মাহিন।
“আমি নিজে এই সমস্যাগুলোর ভুক্তভোগী। তাই বুঝি এগুলো কতটা জরুরি। অনেক সময় শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেও ফল পায় না, কারণ তাদের পক্ষে হল প্রশাসনের কাছে গিয়ে জোরালো অবস্থান নেওয়ার মতো প্রতিনিধি থাকে না। আমি সেই জায়গায় কাজ করতে চাই।” — বলেন মাহিন।
সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানে চাপ তৈরি
মাহিনের পরিকল্পনায় রয়েছে—
শিক্ষার্থীদের প্রতিদিনকার সমস্যা দ্রুত গ্রহণ ও সমাধানে ‘ফিডব্যাক সিস্টেম’ চালু করা
খাবারের মান ও পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে নির্ধারিত স্ট্যান্ডার্ড বাস্তবায়নে কাজ করা
হলের পাঠাগার ও পড়ালেখার পরিবেশ উন্নত করা
সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া চর্চা বাড়াতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা
আবাসন সংকট নিরসনে হলে বেড ও কক্ষ ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনা
হল প্রশাসনের সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের মতামত যুক্ত করা
তিনি জোর দিয়ে বলেন—
“আমি শুধু অভিযোগ শোনা প্রতিনিধি হব না, আমি হব প্রেশার ক্রিয়েটিং ম্যান। প্রয়োজন হলে হল প্রশাসনের ওপর যৌক্তিক চাপ সৃষ্টি করব, যাতে শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন হয়।”
সমর্থন চেয়ে আহ্বান
নিজের প্রার্থিতাকে কার্যকর করতে তিনি বন্ধু, সিনিয়র, জুনিয়র ও হলবাসী সকল শিক্ষার্থীর প্রতি সমর্থন, দোয়া ও পরামর্শ চেয়েছেন।
“আমার সাথে যারা পড়েছেন বা থাকেন, তারা জানেন আমি কখনো শিক্ষার্থীদের স্বার্থে পেছনে থাকিনি। এখন সুযোগ চাই আনুষ্ঠানিকভাবে সবার কণ্ঠস্বর হয়ে কাজ করার। আমাকে যেকোনো পরামর্শ বা সমালোচনাও দিতে পারেন, আমি সেই পথেই কাজ করব।”
ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদের অংশগ্রহণ ও সচেতনতা বাড়লে গণতান্ত্রিক চর্চা ও নেতৃত্বের একটি নতুন ধারা সৃষ্টি হবে বলে বিশ্বাস করেন আরবাব মাহিন।
তার মতে—
“ছাত্ররাজনীতি মানেই গণ্ডগোল নয়, এটা হতে পারে সুন্দর নেতৃত্ব গঠনের প্ল্যাটফর্ম। আমি সেই ইতিবাচক পরিবর্তনের অংশ হতে চাই।”