আবু রায়হান, জয়পুরহাট প্রতিনিধি: ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ৩:০৭:২৯
প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় ৫ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে অংশ নিতে বাধা সৃষ্টি করার অভিযোগ ও ওই ছাত্রী মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ায় জয়পুরহাট সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মাসুদুল হাসানের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সদর উপজেলার খনজনপুর এলাকায় শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় ওই ছাত্রীর নিজ বাস ভবনে তার বাবা আব্দুল কুদ্দুস এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
এতে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার মেয়ে
আমাতুন নূর নাবিহা খঞ্জনপুর শহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণির একজন ছাত্রী। সে উপবৃত্তি পেয়ে আসছে এবং বিদ্যালয় থেকে জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতার পর্যায়ে ২০২২ ও ২০২৩ সালে অংশগ্রহণ করে উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে। সে ৫ম শ্রেণির ১ম সাময়িক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৭৫০ নম্বরের মধ্যে ৭২৫ নম্বর পেয়েছে। প্রধান শিক্ষিকা আমার মেয়ের নাম প্রাথমিক ২০২৫ সালের বৃত্তি পরীক্ষার তালিকায় রাখলেও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মাসুদুল হাসান ও সহকারি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রুহুল আমিন আমার মেয়ের নাম বাদ দেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষককে হুমকি দেন। এক পর্যায়ে নাম বাদ দেওয়া হয়।
তিনি বলেন এতে আমার মেয়ে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে, কান্নাকাটি করে, পড়ালেখা না করে খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিয়। যা শিশু নির্যাতনের সামিল। জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) তদন্ত করে আমার মেয়ের বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণে কোন আইনগত বাধা নেই মর্মে মতামত প্রদান করে। তবুও মাসুদুল হাসান আমার মেয়েকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের বাধা দেন। এরপর জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে ২ সেপ্টেম্বর বিষয়টি সমাধান হয়। আমার মেয়ে প্রায় দুই মাস মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। এ কারণে আমার মেয়ে এবং আমার পরিবার সামাজিক ও আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হই। এজন্য সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মাসুদুল হাসানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য যে, সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদুল হাসানের বিরুদ্ধে নানারকম অনিয়ম, দুর্নীতি স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করেছেন বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষকরা। এ বিষয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সহ ৩ সদস্যের কমিটি গঠন হয়েছে, তদন্ত কমিটি তদন্ত করছে।
এদিকে বিষয়টি জানতে সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মাসুদুল হাসানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বক্তব্য দিতে অক স্বীকৃতি জানান ও কোন মন্তব্য করবেন না।
এ ব্যাপারে জয়পুরহাট জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) রুহুল আমিন বলেন, সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদুল হাসানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে আমাকে সহ ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আমরা গত ৩ সেপ্টেম্বর থেকে তদন্ত শুরু করেছি, তদন্ত শেষে সংশ্লিষ্টদের প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।