টপ টেন

খুলনায় অবৈধভাবে জমি দখলের পাঁয়তারা

  কাজী আতিক, খুলনা প্রতিনিধিঃ ২৮ আগস্ট ২০২৫ , ১২:৪২:৩২

খুলনা নগরীতে মিথ্যা তথ্যের আশ্রয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জমি দখলের পাঁয়তারা করছেন মাসুমা আক্তার নামে এক নারী। অভিযোগ উঠেছে, তিনি জাল দলিল তৈরি করে প্রতারণার মাধ্যমে অন্যের জমি ও বাড়ি দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বটিয়াঘাটা উপজেলার লবণচোরা থানার মাথাভাঙ্গা মৌজায় বিএসআরএস ৪৫৮ নং খতিয়ানভুক্ত প্রায় ৬.৪০ একর জমির প্রকৃত মালিক ছিলেন সুরেশ চন্দ্র দাস। মৃত্যুকালে হিন্দু দায়ভাগ আইনের মাধ্যমে তার চার ছেলে—দিলীপ কুমার দাস, বিজন কুমার দাস, অরিন্দম কুমার দাস ও বাসক কুমার দাস উত্তরাধিকার সূত্রে উক্ত সম্পত্তির মালিক হন। উত্তরাধিকারীগণ নিয়মিত কর-খাজনা প্রদান করে জমির দখল ভোগ করে আসছেন। পরবর্তীতে তারা ব্যবসায়িক কারণে মোহাম্মদ আবু শাহাদাতকে ২০১৭ সালে আমমোক্তার নিযুক্ত করেন। আবু শাহাদাত ২০১৮ সালে ২৫৫১ নং দাগের ৮ কাঠা জমি পপি আক্তার সুইটি ও সাবিনা ইয়াসমিনের কাছে বিক্রি করেন। ক্রেতারা জমি খরিদ করে নিয়মিত নামজারি, কর-খাজনা পরিশোধ করে পাকা ঘর নির্মাণের মাধ্যমে বসবাস শুরু করেন। কিন্তু সম্প্রতি মাসুমা আক্তার জাল দলিল দেখিয়ে স্থানীয় যুবলীগ নেতা আরিফুর রহমান ও এসআই মিহির মণ্ডলের সহযোগিতায় ওই বাড়িতে অবৈধ সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দখলের চেষ্টা চালান। এমনকি চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকা সত্ত্বেও এসআই মিহির মণ্ডলের সহযোগিতায় মিথ্যা দখল প্রতিবেদন তৈরি করানো হয়। অভিযোগ রয়েছে, মাসুমা আক্তার ওই জাল দলিলের ভিত্তিতে খুলনা-মংলা রেললাইনের অধিগ্রহণকৃত জমি থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা হাতিয়ে নিতে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন। একইসঙ্গে তিনি আবারও পপি আক্তার সুইটির বাড়ি দখলের অপচেষ্টা শুরু করেছেন। স্থানীয়রা জানান, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার আন্দোলনের সময় ফ্যাসিস্টদের সহায়তায় তিনি সুইটির বাড়িতে লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা হলে পিবিআই তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট জমা দেয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মাসুমা আক্তার দীর্ঘদিন ধরে মামলাবাজি করে আসছেন। সরকারি কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত কেউ তার অযথা মামলার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। সম্প্রতি তিনি পিবিআই পরিদর্শক মহসিন আলী ও বটিয়াঘাটা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর কার্যালয়ের প্রধান সহকারী মোহাম্মদ আব্দুল আজিজের বিরুদ্ধেও মিথ্যা অভিযোগ আনেন।
এমনকি পপি আক্তার সুইটির নামজারি বাতিলের মামলা করলেও আদালত সেটি খারিজ করে দেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, মাসুমা আক্তার একজন স্বীকৃত মামলাবাজ ও ভূমিদস্যু, যিনি প্রতারণা ও ভুয়া মামলা দিয়ে মানুষের হয়রানি করাকে নেশায় পরিণত করেছেন।

আরও খবর