ভ্রমণ

কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল: খালি নেই হোটেল

  মোঃ সেলিম উদ্দিন খাঁন, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: ৪ অক্টোবর ২০২৫ , ৮:৪৭:৫১

ছুটির শেষ দিনেও কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকের ঢল লাখো পর্যটকের আগমনে কক্সবাজার যেন উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে। গত এক সপ্তাহে প্রায় ৫ লক্ষাধিক মানুষ ভ্রমণে এসেছেন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় এই পর্যটনকেন্দ্রে। শারদীয় দুর্গোৎসব ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা চারদিন ছুটির শেষ দিনে শনিবার (৪ অক্টোবর) সৈকতের সব পয়েন্টেই ছিল পর্যটকের উপচে পড়া ভিড়।বিকেলে সরেজমিনে লাবণী পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, পরিবার-পরিজন ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে সৈকতের সৌন্দর্য অবলোকনে মেতেছেন অবকাশ যাপনে আসা দূর-দূরান্তের পর্যটকরা। মেহেরপুরের গাংনী থেকে পরিবারের ৫ সদস্যকে নিয়ে বেড়াতে এসেছেন আলাউল রণি। তিনি বলেন, সৈকতের ঢেউ মনে শীতলতা তৈরি করে। সুযোগ মিললেই পরিবার নিয়ে চলে আসি কক্সবাজার। এবারের আনন্দটা অন্যরকম। ফিরতে মন চাচ্ছে না। তবুও জীবিকার তাগিদে ফিরতে হবে।আগত পর্যটকদের পাশাপাশি কক্সবাজারের জেলার স্থানীয়রাও সৈকতে আসেন ঘুরতে। বিশেষ করে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সেই সংখ্যা হয় বেশি।রামুর ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, আমাদের গর্ব কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। এটি আমাদের আপন ঠিকানা। যখন মন চায় চলে আসি, এ জেলায় জন্ম নিয়ে আমি সত্যিই পর্যটন মৌসুম শুরু হওয়ায় ব্যস্ততায় সময় পার করছেন শিল্প সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। অনেক দিন পর বিপুল সংখ্যক পর্যটক আসার খুশিতে ভালো মুনাফার আশা করছেন তারা। কলাতলীতে আচার, ঝিনুক-শামুকের অলংকারসহ বিভিন্ন পণ্যের দোকান রয়েছে শহরের বাহারছড়ার বাসিন্দা ইসমাইলের। তিনি বলেন, গত কয়েকদিনে ভালো ব্যবসা হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। পর্যটক না আসলে আমাদের কোনো রকমে ব্যবসা চলে। সে হিসেবে এবার ভালো ব্যবসা হচ্ছে, আশা করছি ভালো লাভ হবে। তবে পর্যটকদের অভিযোগ, মৌসুমের সুযোগে বাড়তি মূল্য আদায় করেন ব্যবসায়ীরা। তাদের প্রত্যাশা দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখা পর্যটনের শিল্পের সার্বিক বিকাশে যেন পণ্য মূল্য জনসাধারণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে।আলিম চৌধুরী নামে ঢাকার এক পর্যটক বলেন, একটি ঝিনুকের মালা এক ব্যবসায়ী ৩ হাজার টাকা চাইলো, এতো দাম কেমনে সম্ভব? নিয়মিত কক্সবাজার ঘুরতে আসি। গুটিকয়েক ব্যবসায়ীর জন্য যেন পর্যটন শিল্পে প্রভাব না পড়ে সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের তৎপর হওয়া উচিত। আগামী ১০ অক্টোবর পর্যন্ত বেশির ভাগ হোটেলের কক্ষ অগ্রিম বুকড রয়েছে বলে হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে। সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, এবার বিপুল সংখ্যক পর্যটক এসেছে। কোথাও কোনো রুম খালি নেই। আমরা সমিতির পক্ষ থেকে সব ব্যবসায়ীদের জানিয়েছি যেন পর্যটকদের কাছে বাড়তি টাকা আদায় না করা হয়। যেহেতু এখন মৌসুমের শুরু, হোটেলগুলোতে পর্যটকের চাপ আরও কয়েকদিন থাকবে। শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রতিমা বিসর্জন ও পর্যটন মৌসুমকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ধরে কক্সবাজারে কঠোর নিরাপত্তা বলবৎ রয়েছে, মাঠে কাজ করছে জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ জানান, এবারের শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান নিশ্চিদ্র নিরাপত্তায় সফলভাবে শেষ হয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে আমাদের তৎপরতা অব্যাহত আছে, কোনো অপরাধীর উৎপাত সৈকত এলাকায় যাতে না হয় সে লক্ষে দিন-রাত কাজ করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় সমন্বিতভাবে নিরাপত্তার বিষয়ে মনিটরিং অব্যাহত আছে।

আরও খবর